নিজস্ব প্রতিবেদক
যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসীর পক্ষ হয়ে পাবনা সদর উপজেলার আতাইকুলায় বাড়িঘর ভাংচুর করে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে স্বপন বিশ্বাস নামের এক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। এঘটনার ৭দিন অতিবাহিত হলেও এখনো কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন কয়েকটি পরিবার। তারা থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
অভিযুক্ত স্বপন বিশ্বাস আতাইকুলা ইউনিয়ন শাখা জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি এবং আতাইকুলার কাছারপুর গ্রামের জমির উদ্দিনের ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে ওয়ারিশসুত্রে প্রতিবেশীর জায়গা কিনে বসবাস করছিলেন এস্কেন আলী প্রামাণিক। জমিটি নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। জমির অপর পক্ষ যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। ছাত্র-জনতার গণঅভুত্থানে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত ৫ নভেম্বর সকালে সেই প্রবাসীদের পক্ষ নিয়ে যুবদল নেতা স্বপন বিশ্বাস তার লোকজন নিয়ে এস্কেন আলীর বসতবাড়ি উচ্ছেদ করে জমিটি দখল নেন। এতে বাধা দিতে গেলে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। জমটি দখল নিয়ে প্রাচীর দেওয়ায় ভুক্তভোগীদের রান্নাবান্না, পায়খানা, গোসলখানাসহ বসবাসের স্থাপনে আটকে যায়। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ভুক্তভোগী পরিবার। থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী এস্কেন আলী প্রামাণিক ও তার পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হঠাৎ করেই তারা বাড়িঘর উচ্ছেদ করে জমি দখল করেছে। প্রাচীর দেয়ার সময় আমাদের বাথরুম-রান্নাঘর ওইপাশে আটকা পড়ে। আমরা পায়ে ধরে অনেক অনুরোধ করেছি যেন অন্তত বাথরুম-রান্নাঘরের জন্য একটু যাওয়ার জায়গা রাখে তাও রাখেনি। ওরা বলেছে এখন আমরা ক্ষমতায় তাই এতোদিন তোরা খেয়েছিস এখন আমরা খাবো। পুলিশ এসেও কোনো কাজ করেনি, বরং পুলিশ যাওয়ার পর তারা আরও বেশি জবরদস্তি করেছে।’
এবিষয়ে অভিযুক্ত স্বপন বিশ্বাস বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দুইবার শালিস হলেও সে পাত্তা দেয় না। কোর্টে মামলাও করেছে। দুই সপ্তাহ আগে থানায় বসার কথা ছিল, কিন্তু সে বসেনি। পরে আমি থানার সহযোগিতায় থানার সঙ্গে কথা বলে আমি নিজেই কা করেনিছি। আইন অনুযায়ী করতে গেলে তো ওর সঙ্গে মারামারা করা লাগতো। আমার লিগ্যাল জিনিস যদি তারা না দেয় তাহলে আর কি করতে পারি?’
এব্যাপারে আতাইকুলা থানার ওসি একেএম হাবিবুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিবার যোগাযোগ করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহফুজ হোসেন বলেন, ‘থানা কখনো জমি দখল করতে কি অনুমতি দেয়? এটার কোনো সুযোগ নেই। জমির বিষয়ে পুলিশ সরাসরি হ্যান্ডেল করতে পারবে না, এটা আদালতের বিষয়। বাড়ি-ঘর ভাংচুর হলে থানাতে অভিযোগ দিয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে, এটার জন্য মামলা হবে।’