মোঃ শামীম হোসেন – খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ
– খুলনার দাকোপে লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে জনজীবন বিপর্যস্ত উপজেলাবাসীর। তীব্র তাপদাহ আর ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের নাকাল হয়ে পড়েছে দাকোপ উপজেলার মানুষ। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। বিদ্যুৎ এর লুকোচুরির কারণে তাদের পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিদিন দিনে ও রাতে ১৫-২০ বার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। তারপর বিদ্যুৎ বিলের সময় কমতি নেই টাকার এ ভ্যাট ওভ্যাট দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে বাড়তি টাকা। এ যেন হরিরলুট চলছে বিদ্যুৎ বিলে। এছাড়া হাজারও শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ভ্রষ্ঠ হচ্ছে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে। যতই পরীক্ষার দিন ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের দুঃচিন্তা। জৈষ্ঠর শুরুতে তেজে উঠছে সূর্য। প্রচন্ড গরম পড়েছে। দিনে রোদের আগুন ও গরমে খাঁ খাঁ করছে চারদিক। রাতেও তাপমাত্রা কমছে না। আর সেই সাথে লোডশেডিং ও তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। থমকে যাচ্ছে উপজেলা বাসীর জীবন। শুধু তাইনয় গরমের কারণে বাড়ছে হিট স্ট্রোকের মতো স্বাস্থ্যঝুঁকি। শিশুরা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে। দাকোপ উপজেলার বাজুয়া এলাকার বাসিন্দা জামাল হোসেন জানান, উপকূল এলাকায় তীব্র তাপদাহ চলছে, তার উপর ভয়াবহ লোডশেডিং শুরু হওয়ায় সাধারণ মানুষজন নাকাল হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্ক মানুষজন অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে। তাছাড়া ৩০শে জুন থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা ঠিকমত পড়াশুনা করতে পারছে না। এর-ফলে তাদের পরীক্ষাতে ও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। উপজেলার লাউডোব গ্রামের দিলীপ সরদার বলেন, অসহনীয় গরমের মধ্যে ঘন ঘন লোডশেডিং সাধারণ মানুষজন অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। গরমের যন্ত্রণায় মানুষজন রাতে ঘুমাতে পারছে না। ঘুমাতে না পারায় অধিক রাত পর্যন্ত মানুষজন রাস্তা ও খোলা মাঠে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় এলাকায় চুরি ও ডাকাতি বেড়েই চলেছে। গভীর রাতে মানুষের ঘরে ও দোকানে বহিরাগত লোক জন এসে স্প্রে করে সকলকে অজ্ঞান করে সোনা ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এলাকা জুড়ে লোডশেডিং এর কারণে ঘন অন্ধকার থাকায় সহজে চোরেরা এসব কাজ করে দ্রুত পালিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানান। এছাড়াও এলাকা বাসী জানান প্রচন্ড গরমের কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে রোগীদের সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ সুদীপ্ত বালা বলেন, গরমে শিশুদের ডায়রিয়া, টাইফয়েড, শরীরে ঘাম বসে নিউমোনিয়া, ঠান্ডা, সর্দি, কাশি, জ্বর ও প্রস্রাবে সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে। এসব রোগ নিয়েই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে রোগীরা। আমরা শিশুকে ঘরের বাইরে বের হতে না দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছি অভিভাবকদের। সেই সঙ্গে বিশুদ্ধ পানি ও টাটকা খাবার খাওয়াতে ও ফ্যানের নিচে রাখতে বলছি। দাকোপ পল্লী বিদ্যুত সমিতির কর্মকর্তারা জানান, উপজেলায় নির্মিত লাইনের পরিমানের অর্ধেকেরও কম বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে গ্রাহকের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। যা থেকে পর্যায়ক্রমে লোডশেডিং করা হয়। তবে কবে নাগাদ বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হবে তা নিশ্চিত করে বলতে না পারলেও খুব তাড়াতাড়ি সমাধান হবে বলে তারা জানান।