বরিশালে ৪৮ স্পটে প্রকাশ্যে গাঁজা-ইয়াবা বিক্রি!
মোঃসিফাত উল্লাহ, বরিশাল প্রতিনিধিঃ
বরিশালে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে গাঁজা-ইয়াবা ও ফেনসিডিল। নগরের চিহ্নিত ৪৮টি স্পটে দিনরাত চলে মাদকের জমজমাট ব্যবসা। অন্তত ২০০ মাদক কারবারির তালিকা আছে গোয়েন্দাদের কাছে।
সরেজমিনে বরিশাল নগরীর কেটিসি এলাকায় মাদক বিক্রির সত্যতা খুঁজতে, ছদ্মবেশে হাজির হই আমরা! নগদ টাকা দিতেই গাঁজা বুঝিয়ে দেন বিক্রেতারা। তাদের দাবি, পুলিশকে ম্যানেজ করে ব্যবসা চালাতে হয়।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছি। মাদককারবারিও আটক হচ্ছে অনেক। কিন্তু জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তারা আবার মাদকে জড়িয়ে পড়ছে। তবে আমরা মাদকের বিরুদ্ধে সব সময় সতর্ক আছি। কাউকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না। আর যদি মাদকের সঙ্গে পুলিশের কারো কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ দিকে বরিশালের নাজিরের পোল এলাকার স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্যস্ততম এই সড়কের এই পোলে দাঁড়িয়ে বছরজুড়ে প্রতিদিনই বিক্রি হয় গাঁজা ইয়াবা ফেনসিডিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালায়, তবে এই পোলের ওপরে নয়, আশপাশে। সেখান থেকে ক্রেতাদের আটক করা হয়, তবে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে মাদককারবারিরা।
নগরীর নাজিরপোল, কেটিস এলাকায়ই নয়, পলাশপুর কলোনি, রসুলপুর কলোনি, মড়ক খোলার পোল, কাশিপুর বাজার, স্টেডিয়াম পেছনে, মেডিকেলের পেছনেসহ অন্তত ৪৮টি স্পটে প্রতিদিন চলে মাদক বিক্রি। তরুণ প্রজন্মের বড় একটা অংশ ঝুঁকছে মাদকে।
বিভিন্ন মাদকবিরোধী সংগঠনের সংগঠক ও স্বেচ্ছাসেবকরা জানান, নদীবেষ্টিত বরিশালে মাদকের আনাগোনা বেড়েছে। বিভিন্ন নদীকে মাদকের রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে সহজেই তরুণদের হাতে মাদক এসে পৌঁছায়। তরুণদের মাদক থেকে দূরে রাখতে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে।
বরিশাল মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর গোয়েন্দা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এনায়েত হোসেন বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা সব সময় সচেতন আছি। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না মাদক নিয়ে ধরা পড়লে। সে যত বড়ই প্রভাবশালী হোক না কেন।
নগর পুলিশ গত এক বছরে মাদকের মামলা করেছে ৮৭৭টি। গ্রেফতার হয়েছে ১২১১ জন। অন্যদিকে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর গ্রেফতার করেছে ১৫২ জন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে। মামলা হয়েছে ১০৮টি।