হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত কার
বিএনপি ও যুবলীগের পাল্টাপাল্টি হামলার জেরে পাবনা সদর উপজেলায় এক বিএনপি নেতার বাড়ি-ঘর, গাড়ি ও দোকানপাটে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ হামলার ঘটনায় যুবলীগের নেতাকর্মীদের দায়ী করছেন বিএনপির নেতারা।
শনিবার (২২ জুলাই) রাত পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার আরিফপুরে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত পৌনে ১১টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত হঠাৎ করেই জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুন্নবী স্বপনের বাড়িতে হামলা চালায়। তার বাড়িতে হামলার পর পাশের জেলা যুবদলের সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক বাহার হোসেনের বাড়িতেও হামলা ও ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। এ সময় সড়কের পাশে বিএনপি নেতাদের দুটি দোকানও ভাঙচুর করা হয়। ভাঙচুর করা হয় একটি প্রাইভেটকারও। এরপর তারা হামলা চালায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নয়নের বাড়িতে। এ সময় আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলা ও ভাঙচুরের এক পর্যায়ে দুর্বৃত্তরা নানা হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুন্নবী স্বপন বলেন, জেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক শিবলী সাদিকের নেতৃত্বে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। তিনি নিজে দাঁড়িয়েছিল। এ সময় যুবলীগের সন্ত্রাসীরা আমার বাড়ি লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়ে। আমার বাড়িসহ যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবকসহ অনেকের বাড়িতে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছেন তারা।
এ ব্যাপারে পাবনা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট মাকসুদুর রহমান মাসুদ খন্দকার এবং পাবনা জেলা বিএনপি আহ্বায়ক কমিটি মহিলা সদস্য বলেন, আমি ঢাকায় আছি। শুনলাম আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। আমি যেহেতু ছিলাম না তাই কারা করেছেন বলতে পারবো না। তবে গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর লিফলেট বিতরণকালে আমাদের দলীয় নেতাকর্মীর সঙ্গে যুবলীগের নেতাকর্মীদের একটা ঝামেলা হয়। সেই ঘটনার জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
এ বিষয়ে পাবনা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আলী মুর্তজা বিশ্বাস সনি ও যুগ্ম-আহবায়ক শিবলী সাদিকের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, কয়েকজন লোক সেখানে কয়েকটা দোকান ভাঙচুর করেছেন। ঘটনার পরপরই সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (২১ জুলাই) আরিফপুরস্থ সদর গোরস্তান জামে মসজিদে জুমার নামাজের পর দলীয় লিফলেট বিতরণ করছিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় তাদের বাধা এবং লিফলেট কেড়ে নেয় যুবলীগের নেতাকর্মীর। পরে বিএনপির নেতাকর্মীদের পালটা ধাওয়ায় যুবলীগের নেতাকর্মীরা সটকে পড়েন। জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আলী মুর্তজা বিশ্বাস সনির ছোট ভাই পনি বিশ্বাসের গাড়ি ভাঙচুর করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় বিএনপির ১৩ নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। মামলার একদিনের মাথায় বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটলো।