মোঃ শামীম হোসেন – খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ– বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’তে রূপ নিয়েছে। এর কারণে মোংলা সমুদ্রবন্দর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। এর প্রভাবে মোংলা সমুদ্র বন্দর ও সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) ভোর রাত থেকেই এ এলাকার আকাশ মেঘাচ্ছন্নতার পাশাপাশি গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে শুরু করেছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ২৬৫ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের উপর দিয়ে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি.মি. যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কি.মি, পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করায় এর প্রাথমিক প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড় মিধিলি আঘাত হানার সম্পর্কে সতর্কতা ও প্রস্তুতি গ্রহণ কার্যক্রম শুরু করেছে মোংলা বন্দর ও পৌর কর্তৃপক্ষ এবং উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) সদস্যরাও প্রস্তুত রয়েছে। মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আ: রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলা মোকাবিলায় মোংলা পোর্ট পৌরসভার পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা দীপংকর দাশ বলেন, সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। উপকূলীয় মানুষের জানমাল রক্ষায় ১০৩ টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সবাইকে আশ্রয়নে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সিপিপির প্রায় ১৩শ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মিধিলা মোকাবিলায় মোংলা উপজেলা প্রশাসনের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মোংলা বন্দর কর্তপক্ষের হারবার কন্ট্রোল সুপারভাইজার নোমান বলেন, জাহাজ আগোমন নির্গমন সহ পন্য ওঠা নামা বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়াও বন্দরে অবস্থানরত সকল লাইটার জাহাজকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।