বঙ্গবন্ধু, ফিলিস্তিনের মুসলিম ও শেখ হাসিন॥
এস এম জুলফিকার জুয়েল
“বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খুব পরিস্কারভাবেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে একথাটি বলেছেন যে, আমরা প্যালেস্টাইনের জনগণের পক্ষে আছি, আমরা একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে আছি। এই নীতিতে আমরা বিশ্বাস করি। সেই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের সাথে ইসরায়েলের সম্পর্কবিহীন যে পথ চলা, সেটা অব্যাহত থাকবে।”
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর শুরুর দিকে যে কয়েকটি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাব করেছিল, তারমধ্যে ছিল ইসরায়েল। ১৯৭২ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ইসরায়েল বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাব করেছিল। তখন স্বাধীন বাংলাদেশের শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকার লিখিতভাবে ইসরায়েলের স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করেছিল। সেই অবস্থানের পিছনে মূল বিষয় ছিল ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সমর্থন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া দল আওয়ামী লীগ এখন সরকারে রয়েছে। এই সরকার এখনও ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়তে নারাজ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বলেছেন-
ফিলিস্তিনে যে ঘটনা ঘটেছে তা সত্যিই অমানবিক। ছোট শিশুদের কান্না এবং তাদের সেই অসহায়ত্ব, মাতৃপিতৃ হারা হয়ে ঘুরে বেড়ানো সেটা সহ্য করা যায় না।
আমরা আমাদের ফিলিস্তিনের ভাইদের সাথে সব সময়ই আছি। আমাদের সরকার থেকে যে কোনো সহযোগিতা আমরা অতীতেও করেছি, এটা আমরা অবশ্যই করে যাব। ইসরায়েলের এই ঘৃণ্য আক্রমণের তীব্র নিন্দা আমরা জানাই।
বাংলাদেশের মানুষের মাঝে ইসরায়েল বিরোধী আবেগ খুবই জোরালো। সত্তরের শেষে এবং আশির দশকে বাংলাদেশের অনেক তরুণ ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধেও গিয়েছিল।
সে সময় ঢাকার রাস্তায় ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসলামপন্থী বিভিন্ন দল বা সংগঠনের মিছিল ছিল নিয়মিত ঘটনা। বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের বিশ্বের একটি দেশেই যাওয়া নিষেধ, সেটি ইসরায়েল। পাসপোর্টে সেটি স্পষ্ট করে লেখা আছে।
বিশ্বে জনসংখ্যা ৮০০ কোটিরও বেশি। ইহুদিদের সংখ্যা দেড় কোটি এর মধ্যে ইসরাইলে ইহুদির সংখ্যা ৬৯ লাখ ৩০ হাজার। বর্তমানে পৃথিবীতে মোট মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে ২০০ কোটি।
ইসরায়েল মুসলিম নিধনে নেমেছে। পৃথিবীর ২০০ কোটি মুসলিম দেড় কোটি ইহুদিদের সাথে পেরে উঠছি না কারন আমরা মুসলমানরা এক হতে পারিনা। আল্লাহকে ভয় করিনা।
আল্লাহর স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি আছে যে, মুসলমানদের ওপর বহির্শত্রু বিজয় লাভ করবে— এমন কোনো ভয় নেই। তবে মুসলমানদের চিন্তার বিষয় একটাই, সেটা হলো তাদের মধ্যে খোদাভীতির অনুপস্থিতি। আল্লাহকে ভুলে তারা বিপথে চালিত হবে, এটাই মূলত আশঙ্কার ব্যাপার।
ইহুদি বা অবিশ্বাসীরা কখনো মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করতে পারবে না। মহান আল্লাহ কোরআনুল কারিমে সুস্পষ্টভাবে এমনই ঘোষণা দিয়েছেন- তারা (ইয়াহুদি/অবিশ্বাসীরা) তোমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না (সাময়িক সামান্য) কষ্ট দেওয়া ছাড়া। আর যদি তারা তোমাদের সঙ্গে লড়াই করে; তবে তারা তোমাদের পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে (পেছনে ফেলে রেখে) পালাবে; তারপর তাদের সাহায্য করা হবে না।’
(সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১১১)।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু
এস এম জুলফিকার জুয়েল
প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক
ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগ।