অবৈধ জাল দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা নিধন-বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নেয়নি কোন পদক্ষেপ।
মোঃ হাফিজুর রহমান বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
মোংলার মিঠাখালী ইউনিয়নের টাটিবুনিয়ার খালে নিষিদ্ধ ভেসাল, বুচনো, কুমোর ও লেট জাল ও ধর্মজাল দিয়ে খাল-বিলে মাছ ধরা হচ্ছে। এতে নিধন হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা ও খালে পানি সরবরাহের বাঁধা পড়ার কারণে পানির সাথে মিশ্র থাকা পলি মাটি পড়ে খাল ভরাট’সহ পানি সরবরাহের সমস্যা হচ্ছে । ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে অনেক প্রজাতির মাছ। প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে এভাবে মাছ ধরা হচ্ছে বলে বিভিন্ন দপ্তরে দীর্ঘদিনের অভিযোগ থাকলেও নেওয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ।
শুক্রবার (২৯সেপ্টেম্বর ) সকালে মোংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের দওেরমেঠ গ্রামের খালের বিভিন্ন স্থানে ভেসাল, বুচনো, কুমোর, লেটজাল ও ধর্মজাল দিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে।সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের টাটিবুনিয়ার খালে প্রায় নয় শতাধিক ভেসাল,বুচনো, কুমোর, লেটজাল ও ধর্ম জাল রয়েছে। যার বেশিরভাগই খালের মধ্যে একটু পরপর দেখা যায়। কোনো তদারকি না থাকায় অবাধে মাছের পোনা নিধন হয়ে যাচ্ছে ও মৃত পশুপাখি খালে বাধা সৃষ্টি হয় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এবং খালের বিভিন্ন স্থানে পলিমাটি পড়ে খাল ভরাট হয়েগেছে।এ বিষয়ে শুকুর শিকারি, মিঠুন বিশ্বাস , অশোক মন্ডল, নরেশ মন্ডল, সুরেশ মন্ডল, পরেশ মন্ডল, অচিন্ত চৌধুরী, সোহাগ চৌধুরী খালু’সহ অনেক বাগদা চিংড়ী চাষি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান,দীর্ঘ একটি বছর ধরে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে যাচ্ছি কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় দেশীয় প্রজাতির নানা প্রকার মাছ এখন বিলপ্তির পথে। এখন নদী-খাল-বিলে আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। আগে উন্মুক্ত জলাশয়ে, ভেটকি, রুই, কাতলা, পাঁইশা,বাগদা চিংড়ী, গলদা চিংড়ী, হরিণা চিংড়ী, , শোল, টাকি’সহ নানা প্রকার মাছ পাওয়া যেত। এছাড়া নদী-খাল-পুকুরে -ঘেরে বড় মাছের মধ্যে রুই-কাতল-মৃগেল, কালিবাউস, আইড়, শোল, বোয়াল পাওয়া যেত। এখন চাষ ছাড়া এসব মাছ তেমন পাওয়া যায় না। মোংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের আন্ধারিয়া গ্রামের চিংড়ী চাষি সোহাগ শেখ বলেন, আমরা প্রতিবছর প্রায় ২ লহ্ম টাকা খরচা করে বাগদা চিংড়ীর পোনা আমাদের ঘেরে লালন- পালন করি কিছু লাভের জন্য তবে বিভিন্ন রোগ বালাইয়ের কারনে বাগদা চিংড়ী চাষে লাভবান হওয়ার আশা নাই। গত কয়েক মাস হলো নতুন করে খাল পুনঃখনন করেছে আমাদের ঘেরের পানি সরবরাহের সমস্যার জন্য তবে খালের বিভিন্ন জায়গায় ভেসাল, বুচনো, লেটজাল, কুমোর দিয়ে মাছের পোনা নিধন সহ খাল ভরাট করে ফেলছে এতে আমাদের চিংড়ী চাষের ঘেরে অনেক হ্মতি হচ্ছে।
এ বিষয়ে মোংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের দওেরমেঠ গ্রামের অলোক মন্ডল বলেন, আমাদের বাগদা চিংড়ী চাষের ঘেরে যে টাকার পোনামাছ লালন – পালন করি তা বছর পূর্ণ হলে হিসাব করে দেখি তেমন একটা লাভ হয়না। এবং খালে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছের পোনা ঘেরের পানি সরবরাহের সাথে প্রবেশ করে আমাদের চিংড়ী চাষের পাশাপাশি ওটা বড় হয় এবং আমাদের লচের কিছু টা ঘাট্টি পুরান করে। আর খালে ভেসাল, বুচনো, লেটজাল, ধর্মজাল, কুমোর দিয়ে মাছের পোনা নিধন করে ফেলে একটি চক্র তাই এই দেশীয় মাছের পোনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি তাই দ্রুত এই জাল ও কুমোর গুলি অবসরের জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে মিঠুন বিশ্বাস ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, খালে অনেকে মৃত পশুপাখি পেলেন সেইটা জালে বাধা সৃষ্টি হয় আর অনেক দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয় গত দুদিন আগে আমার মেস্তা তো ভাই অচিন্ত চৌধুরী, আর আমি একটা চারো জালের কাছে কাজ করি।
আর আমার ভাই একটি মৃত পশুর দুর্গন্ধে অসুস্থ হয়, তখন আমি কয়েকজন চারো জাল মালিক কে চারো জাল টি ওঠাতে বলি তখন আমাকে বিভিন্ন প্রকারের গালিগালাজ ও মারধর করতে আসছেন তাই খালটি পরিষ্কার করা অতি জরুরী এবং কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন তারা যেন দ্রুত এ বিষয়টি সমাধান করেন।
এ বিষয়ে মোংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নে ২নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার সোহরাব গাজীর কাছে জানার জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছেন।
এ বিষয়ে মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ভেসাল, কুমোর, বুচনো, লেটজাল ও ধর্মজাল এই গুলি অবৈধ, তবে আমাদের কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আমরা দ্রুত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তা অপসারণ করব।