মোঃ কামাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি
যশোরের অভয়নগরে আবারও অবৈধ চুল্লিতে অবাধে কাট পুড়িয়ে কয়লা বানানোর যে মহা উৎস
বে মেতে উঠেছে অবৈধ অসাধু ব্যবসায়ীরা এদের ক্ষমতা বা খুঁটির জোর কোথায়। জনমনে নানান প্রশ্নের জন্মদিয়ে চলেছে বন উজাড় করা পরিবেশ দূষণ কারিদের কয়লা তৈরির কারণে। অভয়নগর উপজেলা ও পরিবেশ অধিদপ্তর কতৃপক্ষ বার বার ওই সব অবৈধ কাঠ পুড়ানো চুল্লী গুলো ভেঙ্গে গুড়িয়ে ধ্বংস করে দিলেও অজানা অপশক্তির কাছে পরাজিত হচ্ছে কতৃপক্ষের সেই সব পদক্ষেপ। ফলে ওই এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোপের সৃষ্টি হয়েছে, অনেকে আক্ষেপ করে জানিয়েছে, ওই সব অবৈধ ভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি কারীরা কি প্রশাসনের থেকেও ক্ষমতাধর? যে স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধাংগুল দেখিয়ে অবৈধ ভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করে পরিবেশ ধ্বংস করে চলেছে, অসাধু মুনাফা লোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। উল্লেখ অভয়নগর উপজেলার সিদ্দিপাশা এলাকায় প্রতিনিয়ত কাঠ পুড়িয়ে কয়লার ব্যবসা করে যাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। শতাধিক মাটির কাঁচা চুল্লি তৈরি থেকে কয়লা বানিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে দেধারছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাটি, ইট ও কাঠের গুঁড়া মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে বড় আকারের চুল্লি। চুল্লির মধ্যে সারিবদ্ধভাবে কাঠ সাজিয়ে চুল্লির খোলা মুখ দিয়ে আগুন দেয়া হয়। প্রায় ৭ থেকে ১০ দিন পোড়ানোর পর চুলা থেকে কয়লা বের করা হয়। ওই এলাকায় ১০০/১২০ টি অবৈধ চুল্লী তৈরি করেছে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট, প্রতিটি চুল্লিতে প্রতিবার ২৫০ থেকে ৩০০ মণ কাঠ পোড়ানো হয়। পরে কয়লা গুলো বের করে ঠান্ডা করে বিক্রির উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই সব অবৈধ পরিবেশ দূষণকারীদের কাছ থেকে স্থানীয় কিছু অসাধু সাংবাদিক পুলিশ জনপ্রতিনিধিরা মাসিক মাসোয়ারার মাধ্যমে ওই অবৈধ সিন্ডিকেটকে কাঠপুড়িয়ে কয়লা তৈরি করতে সহযোগিতা করে থাকেন। ফলে কিছুতেই আইন ও নিয়মকানুনকে ধোড়ায় কেয়ার করেনা ওইসব চুল্লী তৈরিকারীরা। তথ্য সূত্রে আরো জানা গেছে, স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগে অনেকবার এলাকাবাসীরা উপজেলা প্রশাসনের কাছে একাধিক বার অভিযোগ করার পরেও কোন ভাবে বন্ধ হচ্ছেনা পরিবেশ দূষণকারীদের কর্মকান্ড। ব্যাবসায়ীরা প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে এই ব্যবসা করছেন। উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতর থেকে চারবার অভিযান চালিয়ে চুল্লিগুলো গুঁড়িয়ে দিলেও বন্ধ হয়নি এ অবৈধ ব্যবসা। প্রতিবারই আরও নতুন নতুন চুল্লি তৈরি হয়েছে। সরকারি নিয়মনীতিকে কেয়ার না করে এসকল ব্যক্তিরা কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করে আসছে। এই কাট পুড়িয়ে কয়লা বানানোর কারণে আমাদের শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগ দেখা দিয়েছে। ফলে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, উজাড় হচ্ছে গাছপালা। ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে অবাধে চুল্লিতে এ কয়লা তৈরি হওয়ায় নির্গত ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের জিয়া মোল্যা, ছোট্ট মোল্যা, শহিদ মোল্যা, হারুন মোল্যা, রফিক মোল্যা, তৌকির মোল্যা, কবীর শেখ, হাবিব হাওলাদার, তসলিম মিয়া, মনির শেখ কামরুল ফারাজী এবং ধূলগ্রামের হরমুজ সর্দার, রকশেদ সর্দার, ফারুক হাওলাদার এ অঞ্চলে শতাধিক চুল্লি তৈরি করে কয়লা বানিয়ে আসছেন। কিন্তু তারা এতটাই দুর্র্ধর্ষ যে স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তো দূরের কথা মুখ খুলতেও সাহস করেনা। এ বিষয়ে কয়েকজন চুল্লি মালিকের সাথে কথা বললে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঘাটে ঘাটে টাকা দিয়ে আমাদের ব্যবসা চালাতে হয়। স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে সব মহলকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেই তারপর ব্যবসা চালাই। এবিষয়ে যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালকের মুঠোফোনে ০১৯১৯৮৭৭৩৯৭ নম্বরে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি ফোনটা রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এবিষয়ে অভয়নগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নওশাদ বলেন, খোঁজ খবর নিয়ে দ্রুতই অভিযান চালানো হবে। দ্রুত সময়ের ভেতরে তদন্ত করে অভিযান চালিয়ে চুল্লি বন্ধসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।