মোঃ শামীম হোসেন – খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ- খুলনা মহানগরীর গল্লামারী এলাকায় ময়ূর নদীর ওপর পাশাপাশি থাকা দুটি সেতু ভেঙে ফেলা হবে। এখন সেখানে চার লেনের একটি নতুন সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। সেতুটি রাজধানীর হাতিরঝিলের মতো দৃষ্টিনন্দন হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, দুটি সেতুর মধ্যে একটি ব্রিটিশ আমলে, অন্যটি ২০১৬ সালে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। সেতুটি ভাঙলে সরকারে গচ্চা যাবে ৭ কোটি টাকা। নতুন সেতু নির্মাণের জন্য আগস্ট মাসের প্রথম দিকে দরপত্র আহ্বান করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) কর্তৃপক্ষ। প্রক্রিয়া শেষ করে ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়া হবে। চার লেনের সেতুটির দৈর্ঘ্য ৭০ মিটার এবং প্রস্থ ২০ মিটার। নদীর পানির লেভেল থেকে সেতুর উচ্চতা ৫ মিটার। নদীর মধ্যে কোনো পিলার থাকবে না। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৫ কোটি টাকা। কাজ শেষ করতে হবে দেড় বছরে। সওজের খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান মাসুদ জানান, রাজধানীর হাতিরঝিলের আদলে সেতুটির নকশা তৈরি করা হয়েছে। নতুন সেতু নির্মাণের আগে গল্লামারীতে যে দুটি সেতু রয়েছে, তা ভেঙে ফেলা হবে।
নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ভবিষ্যতে ময়ূর নদী খননের বিষয়ে খুলনা সিটি করপোরেশনের পরিকল্পনা রয়েছে। সেতুটির নিচ দিয়ে যেন নৌযান চলাচল করতে পারে, সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএর ‘নেভিগেশনাল ক্লিয়ারেন্স’ নেওয়া হয়েছে। সওজ সূত্রে জানা গেছে, গল্লামারীতে ময়ূর নদীর ওপর ব্রিটিশ আমলে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। ওই সেতুর পাশে ২০১৬ সালে আরেকটি সেতু নির্মাণ করা হয়। ব্যয় হয় প্রায় ৭ কোটি টাকা। কিন্তু সেতুটি নির্মাণ করা হয় নদীর পানির লেভেল থেকে মাত্র পাঁচ ফুট ওপরে। এর ফলে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ২০২০ সালের আগস্টে সেতুটি ভেঙে ফেলার সুপারিশ করে বিআইডব্লিউটিএ। সে সময় বিআইডব্লিউটিএর ছাড়পত্রও নেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, এত নিচু কোনো সেতু হতে পারে না। আর এ কারণে ওই টাকা এখন গচ্চা যাচ্ছে। অপরিকল্পিত এমন কাজের মাধ্যমে সরকারি অর্থ অপচয়ের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি। তবে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, কেন ও কীভাবে এ রকম সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল তা জানেন না তিনি।