ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। ফাইল ছবি ফোকাস বাংলা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
দেশে জঙ্গিবাদ নিশ্চিহ্ন হয়নি, তবে তা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। তিনি বলেন, ‘দেশে জেএমবি বা নব্য জেএমবি এখন নেই বললেই চলে। তবে, তাদের সুপ্ত বীজ লুকায়িত থাকতে পারে।’ আজ শনিবার (১ জুলাই) গুলশানে হলি আর্টিজান জঙ্গি হামলায় শহীদ দুই পুলিশ সদস্যের ম্যুরালে শ্রদ্ধা জানিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আজ থেকে সাত বছর আগে ২০১৬ সালের পহেলা জুলাই হলি আর্টিজানে বিদেশি নাগরিকদের অতর্কিতভাবে জিম্মি ও তাদের হত্যা করা হয়। এ সময় তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে আমাদের দুজন সিনিয়র পুলিশ সদস্য শহীদ হন। আজকেও আমাদের মনে এটা দগ্ধ ঘায়ের মতো জ্বলে। দেশি-বিদেশি আন্তর্জাতিক চক্রান্তে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করতে বিগত ২০১৫-১৬ সালে বিভিন্ন জঙ্গি হামলা ঘটানো হয়। আমাদের উন্নয়ন সহযোগীরা উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে ভয়ে দেশ ছেড়ে চলে যেতে থাকে।’
খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুলিশ ও জনগণ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। সব উন্নয়ন সহযোগীদের স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়–আমরা বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিদের উৎখাত করব, আপনারা ফিরে আসেন। তারপর আমাদের উন্নয়ন সহযোগীরা দেশে ফিরে আসেন এবং আমাদের উন্নয়ন যাত্রা অব্যাহত রয়েছে। এরপর বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ, গ্রেপ্তার ও বিচারে সোপর্দ করা অব্যাহত ছিল। যার ফলে সমগ্র বাংলাদেশে জঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আছে। জঙ্গিবাদ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি, আমরা বলব, এটা নিয়ন্ত্রণে আছে।’
খন্দকার গোলাম ফারুক আরও বলেন, ‘হলি আর্টিজান হামলায় বিদেশিসহ মোট ২২ জন নিহত হন। এই ঘটনায় সিটিটিসি তদন্ত করে। তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। যদিও এ ঘটনার অনেক অভিযুক্ত বিভিন্ন সময় জঙ্গি হামলা করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়। আর বাকিদের সাজা হয়ে গেছে। আমরা এখন বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। আশা করি, ভবিষ্যতে জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ ধরে রাখতে পারব।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘জেএমবি, নব্য জেএমবিসহ জঙ্গিবাদ নেই বললেও চলে। তবে, জঙ্গিবাদের সুপ্ত বীজ লুকিয়ে থাকতে পারে। নতুন কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এই সংগঠনের ডাকে অনেক তরুণ হিজরত করেছিল, পাহাড়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। আমাদের পুলিশ-র্যাব তাদের অনেককে গ্রেপ্তার করেছে। আবার অনেকে ভুল বুঝতে পেরে আত্মসমর্পণ করেছেন। আমরা কয়েক দিন আগেও শারক্বীয়ার প্রধানকে গ্রেপ্তার করেছি। তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, যে নামেই আসুক না কেন, তারা বাংলাদেশ স্থান পাবে না।’
এদিন গুলশানে পুলিশের ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন করে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালিসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের কর্মকর্তারা। পরে ভারতীয় দূতাবাসের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা সাংবাদিকদের বলেন, ‘জঙ্গি দমনে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’