সুবিশাল পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে হিমশীতল ঝিরিঝিরি হাওয়ার অনুভূতি নেওয়ার এক অভূত স্থান হচ্ছে সিকিম। নিসর্গের অসীমতায় ভেসে বেড়াব আর চোখ মেলে ধরব নীল আকাশের বিশালতা। আমাদের দেশে শীত পেরিয়ে তখন বসন্তের আগমন। ফাগুনের গরম হিমেল হাওয়া প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছে।
ভারতের সিকিম ও দাজিলিং রাজ্য ঘোরার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। সমতল ভূমির চা বাগানে পেরিয়ে আরও বেশ কয়েক মাইল যেতেই দেখা মিলল সবুজ পাহাড়। পড়ন্ত বিকালে উঁচু পাহাড়ি রাস্তায় যখন আমাদের গাড়ি এঁকেবেঁকে চলছে, তখন নিচের দিকে তাকিয়ে দেখা মিলল পাথুরে স্বচ্ছ হ্রদ। দুপাশে পাহাড় আর মাঝে বয়ে চলা হ্রদের পানির গভীরতা না থাকলেও আছে স্রোতের তীব্রতা। স্বচ্ছ নীলাভ জলের খরস্রোতা লেকের মাঝে পড়ে থাকা বিশাল বিশাল পাথর খণ্ডে ধাক্কা খেয়ে নিজের গতিপথ পরিবর্তন করে এগিয়ে যাচ্ছে দুরন্ত গতিতে। মাঝে মাঝে দেখা মিলছে বন্য বানরের। ওরা উপদলে বিভক্ত হয়ে রাস্তার বাঁকে বাঁকে বসে আছে।
র্যাম্পো হলো— সিকিম রাজ্যের দূতাবাসের মতো। এর পর আছে গ্যাংটক। গ্যাংটকের কাছাকাছি এসে পৌঁছালে যেন বড় বড় পাহাড়ের দেখা মিলছে আর পাহাড়গুলো নিজেদের রূপবৈচিত্র্য মেলে ধরছে ভিন্ন আঙ্গিকে।
গ্যাংটকের রাস্তায় ধূমপান, আবর্জনা ফেলা এবং থুতু ফেলা আইনত নিষিদ্ধ। রাস্তার মাঝখানের বাগান পরিপূর্ণ করে রাখা হয়েছে বিভিন্ন প্রকার ঝুলন্ত টপ ও মাটিতে বপন করা ফুল ও সৌন্দর্য বধনকারী গাছের সমাহারে। গাছের প্রতিটি ডাল ও পাতায় বিভিন্ন রং বেরঙের লাইটিং করে রাস্তার সৌন্দর্যের মাত্রা যেন আরও বাড়িয়ে দেয়। কিছুদূর পর পর বাগানের মাঝে স্থাপন করা হয়েছে কৃত্রিম ঝর্ণা। বাগানের গা ঘেঁষে দুধারে রাখা বেঞ্চগুলোতে বসে ভ্রমণকারীরা বসে আছে, কেউবা সেলফি তোলায় ব্যস্ত।