স্মার্ট ফকিরহাট: ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার।
মোঃ হাফিজুর রহমান
লেখক: ©️এস এম জুলফিকার জুয়েল।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের পরে এখন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্য নিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে বাংলাদেশের দু’টি এলাকাকে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। একটি গাজীপুর জেলা অফিস ও অন্যটি বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা।
স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট এবং স্মার্ট সোসাইটি এই চারটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তিকরে আগামীর স্মার্ট ফকিরহাট গড়ার লক্ষ্যে বাগেরহাট-১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জননেতা জনাব শেখ হেলাল উদ্দীন এর নির্দেশনা ও সার্বিক সহযোগিতায় ফকিরহাটের আপামর জনগনকে সাথে নিয়ে নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন ফকিরহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেতা স্বপন দাশ।
স্মার্ট ফকিরহাটে প্রযুক্তির মাধ্যমে সবকিছু সম্পন্ন হবে। এখানে নাগরিকরা প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হবে এবং এর মাধ্যমে সমগ্র অর্থনীতি পরিচালনা করবে। ভবিষ্যৎ স্মার্ট ফকিরহাট হবে সাশ্রয়ী, টেকসই, জ্ঞানভিত্তিক, বুদ্ধিদীপ্ত এবং উদ্ভাবনী। স্মার্ট ফকিরহাটের সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের পাশাপাশি নাগরিকদের জন্য উন্নততর জনবান্ধব সেবা প্রদানে আধুনিক প্রযুক্তিগুলোকে কাজে লাগানো হবে। স্মার্ট ফকিরহাটে স্বাস্থ্যসেবা, পরিবহন, জননিরাপত্তা, ইউটিলিটি এবং প্রশাসনের পরিষেবাকে মানুষের আস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে রুপান্তর করা হবে।
স্মার্ট ফকিরহাটের স্মার্ট ভিলেজ বেতাগা। পর্যায়ক্রমে ফকিরহাটের স্মার্ট ভিলেজগুলো হবে এমন এক গ্রামীণ জনগোষ্ঠী যেখানে ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং উন্মুক্ত উদ্ভাবনী প্ল্যাটফর্মের ব্যবহারের মাধ্যমে স্থানীয় নাগরিকরা বিশ্ব বাজারে সাথে যোগাযোগের সুযোগ পাবে। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের বিভিন্ন সেবা প্রদান ব্যবস্থাকে উন্নত করা, খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস বিকাশে স্মার্ট ফকিরহাটের স্মার্ট ভিলেজ বেতাগার মত অন্য স্মার্ট ভিলেজগুলো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
এরই মধ্যে বিগত ২রা অক্টোবর সরকারের অ্যাসপায়ার টু ইনোভেশন (এটুআই) প্রকল্পের একটি প্রজেক্ট উদ্বোধন করা হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে সরকারি সব ধরনের সেবা অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসেই পাবেন ফকিরহাটের সাধারণ জনগণ। পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয়, ভূমি অফিস, হেলথ কমপ্লেক্সকে ফাইবার অপটিকের আওতায় আনা হবে। অনলাইনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চালু হবে ওয়ান স্টুডেন্ট ও ওয়ান ল্যাপটপ। তরুণ প্রজন্মের মেধা, বুদ্ধি ও জ্ঞানের বিকাশ কেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠবে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর।
আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। বাংলাদেশে কোন দারিদ্র থাকবে না, সব মানুষই উন্নত জীবন যাপন করবে। বর্তমান সরকার শুধু স্বপ্ন দেখায় না, স্বপ্ন বাস্তবে রূপদান করে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন না বাস্তব। এমনই স্মার্ট বাংলাদেশ বা স্মার্ট ফকিরহাট বাস্তবে রূপ নেবে।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে মাথাপিছু আয় ২,৮২৪ ডলার। মেট্রোরেল ও পদ্মা সেতু উদ্বোধন- দুটিই উন্নয়নের মাইলফলক। সফলভাবে কারোনা মহামারি মোকাবিলা, শিক্ষা, যোগাযোগ অবকাঠামো, গ্যাস, বিদ্যুৎ, নারী শিক্ষা, চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা শতভাগ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, সামাজিক কর্মসূচির আওতায় পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠী, অসহায়, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, তালাকপ্রাপ্ত নারীদের সহায়তা, অটিজম, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা প্রদান, আশ্রয়ণ প্রকল্প, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প,
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও আইসিটি খাতে বিপ্লব সাধন, করোনা মহামারি মোকাবিলায় অসামান্য সাফল্যে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে ও বিশ্বে পঞ্চম স্থানে আসীন করা, দেশকে উন্নয়নশীল বিশ্বের কাতারে শামিল করা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগ দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত সমাজ, আবাসন সমস্যার সমাধান, শিক্ষা, চিকিৎসা, কর্মসংস্থান, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী এবং ডিজিটালাইজেশনকে অগ্রাধিকার দেওয়া, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন সেক্টরের সামগ্রিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার।
দেড় যুগ আগে বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশের মতোই ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিল, যার শতভাগ সফলতা এখন দৃশ্যমান। ডিজিটাল বাংলাদেশের একটি বড় সুবিধা হচ্ছে, দেশের সব কিছু উন্নত বিশ্বের মতো প্রযুক্তিনির্ভর করে তোলা, যাকে এককথায় ডিজিটালাইজেশন বলা হয়ে থাকে। ডিজিটাল বাংলাদেশের বদৌলতে সরকার দেশের সব নাগরিকের জন্য ন্যাশনাল আইডি (এনআইডি) চালু করেছে, যেহেতু এনআইডি সম্পূর্ণ প্রযুক্তিনির্ভর একটি ডকুমেন্ট, তাই এর গ্রহণযোগ্যতা শুধু দেশের অভ্যন্তরেই নয়, দেশের বাইরেও অনেক বেশি।
স্মার্ট বাংলাদেশ শুধু একটি স্লোগান নয়, আগামী দুই যুগ ধরে চলবে এমন এক বিশাল কর্মযজ্ঞের নাম স্মার্ট বাংলাদেশ। “চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বর্তমানের চেয়ে ৫-১০ গুণও বাড়তে পারে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল গ্রহণের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হলে প্রয়োজন স্মার্ট সিটিজেন।
উন্নত বিশ্ব প্রযুক্তি ব্যবহারে আজ যে পর্যায়ে এসেছে তার কাজটা শুরু করেছিল আজ থেকে তিনদশক আগে। তার পরও এখন দেশ যে শতভাগ প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে গেছে এমন দাবি করার সময় এখনো আসেনি। সেই বিবেচনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সঠিক সময়েই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর বাংলাদেশের মানুষের আস্থা রয়েছে। শেখ হাসিনা দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছেন। বর্তমান সরকারই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারবে। ২০০৮ সালে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলবেন। আজ বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে। এখন যে স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলছেন তাও শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই সম্ভব।এখন প্রয়োজন শুধু কাধে কাধ মিলিয়ে এই উদ্যোগকে সফলভাবে এগিয়ে নেওয়ার৷ ২০২৩ সালের শেষ কিংবা ২০২৪ সালের শুরুতে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিতে এবং বর্তমান সরকারের বাস্তবায়নাধীন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে নৌকা প্রতীকে ভোট দিন। নৌকা মার্কায় ভোট দিলেই যে দেশের উন্নতি হয়, সেটি আজকে সর্বজনবিদিত।
জয় বাংলা,জয় বঙ্গবন্ধু৷
এস এম জুলফিকার জুয়েল
প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক
ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগ
dengerjwell@gmail.com