নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
স্বল্পোন্নত থেকে মসৃণ ও টেকসই উত্তরণের জন্য বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলকে ব্রাসেলসে একাধিক বৈঠকে ইইউ পার্লামেন্টের সদস্য ও ইউরোপিয়ান কমিশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা সহযোগিতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বেলজিয়ামের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার বাংলাদেশ ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষ্যে ইউরোপের নেতারা বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও জিএসপি রেগুলেশনের র্যাপোরটিয়ার হেইডি হাউতলা, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিটির (আইএনটিএ) চেয়ার ও ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য বার্ন্ড ল্যানগে, আইএনটিএর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক মনিটরিং গ্রুপের র্যাপোর্টিয়ার ও ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য ম্যাক্সিমিলিয়ান ক্রাহর সঙ্গে বৈঠক করেন। ইউরোপিয়ান এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিস ও অর্থনৈতিক এবং বৈশ্বিক ইস্যু বিষয়ক ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল হেলেনা কনিগ, এশিয়া-প্যাসিফিক বিষয়ক অ্যাকটিং ম্যানেজিং ডিরেক্টর পাওলা প্যাম্পালোনির সঙ্গেও বাংলাদেশ দলের বৈঠক হয়।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ‘এভরিথিং বাট আর্মস’ শীর্ষক বাণিজ্য সুবিধার যথাযথ ব্যবহার করে আর্থসামাজিক পরিস্থিতির অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে বাংলাদেশ এবং এখানকার মানুষের জীবনমানের পরিবর্তনের বিষয়টি তুলে ধরেন বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল।
বাণিজ্যের বহুমুখীকরণ ছাড়াও বাংলাদেশ এখন সার্কুলার অর্থনীতির মাধ্যমে বৃহত্তর টেকসই ও স্থায়িত্ব অর্জন, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং নবায়নযোগ্য শক্তি ও সবুজ প্রযুক্তির বর্ধিত ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করছে। এ বিষয়গুলোও তুলে ধরা হয় বৈঠকে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ তার নিজস্ব জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমন পরিকল্পনাও প্রণয়ন করেছে।
বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চলমান বাহ্যিক অস্থিরতা, খাদ্য ও জ্বালানি সংকট এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক বাজারে অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের পর আরও ছয় বছরের জন্য ইন্টারন্যাশনাল সাপোর্ট মেজারস অব্যাহত রাখার আলোচনায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় দৃঢ় সমর্থন প্রদানের জন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আলোচনাধীন নতুন জিএসপিতে বাংলাদেশের বাণিজ্য স্বার্থ, বিশেষ করে তৈরি পোশাকশিল্পের সুরক্ষা প্রদানেরও অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ। কোম্পানি ও ব্র্যান্ডগুলোর পক্ষ থেকে ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ ও দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রাসঙ্গিক কোম্পানিগুলোর জবাবদিহি নিশ্চিতকল্পে করপোরেট সাসটেইনেবিলিটি ডিউ ডিলিজেন্সের আওতায় একটি মেকানিজম তৈরির অনুরোধও করা হয়।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে মুখ্যসচিব ছাড়াও রয়েছেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের সভাপতি নিহাদ কবির ও বাংলাদেশ এমপ্লোয়ার্স ফেডারেশনের মহাসচিব ফারুক আহমেদ। রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহও বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।