মোঃ শামীম হোসেন – খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস অবিলম্বে দেশবাসীর কাছে হাত জোর করে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক স্যাংশন মানেন না, নির্বাচন করবেন। আমরাও বলি নির্বাচন তো করতেই হবে। তবে তা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। আপনারা যে সংবিধানের অধীনে নির্বাচনে এসেছিলেন, সেই সংবিধানে নির্বাচন হতে হবে। মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে খুলনার শিববাড়ি মোড়ে বিভাগীয় রোডমার্চের সমাপনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সাবেক মন্ত্রী আব্বাস আরো বলেন, সেলফিতে বিএনপির মাথা খারাপ হয়নি, স্যাংশন খেয়ে আওয়ামী লীগের মাথা খারাপ হয়েছে। তবে আমাদেরও মাথা খারাপ হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া কোন নির্বাচন হবে না। বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসা প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, দেশনেত্রীকে বিদেশে চিকিৎসার ৪৮ ঘন্টা সময় প্রায় শেষ হতে চলেছে। ওই সময়ের মধ্যে না হলে পরিস্থিতি ভয়ানক হবে। তাই অবিলম্বে মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রীর ছেলের জয়ের সম্পদ রেখে আসার বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, জয় এমন কী চাকরী করেন, এতো টাকা পেলেন। ওই টাকা জনগণের। আওয়ামী লীগ ১ লাখ ৯ হাজার বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। ৮ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি হয়েছে। ব্যাংকের সোনা এখন তামা হয়ে যায়। এসবে সঙ্গে আওয়ামী লীগের লোকজন জড়িত। তিনি বলেন, খুলনায় আওয়ামী লীগ সব পাটকল বন্ধ করে দিয়েছেন। ডিমের হালি ৬০টাকা, চালের কেজি ৭০ টাকা শ্রমিকরা খেতে পারেন না। সেই চিন্তা আওয়ামী লীগ করে না। এই দেশের মানুষের অধিকার ফিরে পাওয়ার সংগ্রা করছেন, এই সরকার কিছু মানুষকে হত্যা করতে পারবে, গুম খুন গ্রেপ্তার করতে পারবে কিন্তু গনতন্ত্রকামী মানুষের জোয়ার ঠেকাতে পারবে না। বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাষ্ট্রীয় কোষাগারের ৪০০ কোটি টাকা শেখ পরিবারের। প্রধানমন্ত্রীর ভাই, ভাতিজা, আত্মীয় স্বজন এ টাকার মালিক। তারা দেশের সম্পাদ লুটপাট করেছে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। নেত্রী বিনা চিকিৎসায় মারা গেলে, এদেশে শেখ হাসিনাকেও থাকতে দেওয়া হবে না।
এর আগে ঝিনাইদহ শেতে শুরু হওয়া বিভাগীয় রোডমার্চ খুলনার শিববাড়ি এসে শেষ হয়। সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে দেশব্যাপী রোডমার্চ কর্মসূচির অংশ হিসাবে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দুপুরে এটি শুরু হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মীর্জা আব্বাস। কর্মসূচিতে বিএনপি নেতারা বলেন, অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাটে বর্তমান সরকারের সময় ফুরিয়ে গেছে। তাদের পায়ের নীচে মাটি সরে গেছে। আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। নির্যাতন, নিপীড়ন চালিয়ে তারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। তাই অবিলম্বের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনের দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। বিএনপি নেতারা অবিলম্বের দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশী চিকিৎসার দাবি জানিয়ে বলেন, এই সরকারের কাছে কোন মানবতা নেই। তারা তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়াকে পাতানো মামলায় আটকে রেখেছে। দলটির নেতাকর্মীরা জানান, দুপুর ১২টার দিকে খুলনা বিভাগের ঝিনাইদহ জেলা থেকে রোর্ডমার্চ শুরু হয়ে মাগুরা-যশোর-নওয়াপাড়া-ফুলতলা হয়ে খুলনার শিববাড়ি মোড়ে শেষ হয়। রোর্ডমার্চ পথে মাগুরায় একটি স্থানে রোডমার্চ বহরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটলেও আর কোন বাধা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
রাত ৮টার দিকে খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী। অতিথি ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি, খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, মানব অধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ড. ওবায়দুল ইসলাম, খুলনা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, উপ কোষাধ্যক্ষ মাহমুদ আলম খান বাবু, কেন্দ্রীয় নেতা অমলেন্দু দাস অপু, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, নেওয়াজ হালিমা আরলী, জাহানারা বেগম, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান প্রমুখ। বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বাবায়ক আমীর এজাজ খান, নগর সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, আবু হোসেন বাবু, রেহেনা ঈশা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে রোডমার্চ উপলক্ষে ব্যাপক উৎদ্দীপনায় বিএনপির নেতাকর্মীরা শিববাড়ি মোড়ে আসতে শুরু করেন। তাঁরা সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অধীনে নির্বাচন, খালেদা জিয়া মুক্তিসহ বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ব্যানার -ফেস্টুন বহন করেন। বিকেল ৩টা থেকে সেখান জাসাসকর্মীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন শুরু করে। রাত ৮টার দিকে আনুষ্ঠানিক জনসভার শুরু পূর্ব পর্যন্ত এ পরিবেশনা চলে।
খুলনা বিভাগের রোড মার্চটি শুরু হয় ঝিনাইদহ হতে। মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ঝিনাইদহ শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে উদ্বোধনী সমাবেশের পর রোডমার্চ শুরু হয়। সমাবেশ শুরু হয় দশটার দিকে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এখানকার সমাবেশে কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ জেলার নেতা-কর্মী-সমর্থকরা অংশ নেন। এরপর শুরু হয় খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রা। ১৬০ কিলোমিটার দীর্ঘপথে মাগুরায় ২টি, যশোরে ৩টি ও খুলনার প্রবেশমুখে একটি পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদের উদ্ব