রামপালে ছিনতাই চক্রের ৭'সদস্য আটক।
মোঃ হাফিজুর রহমান বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি||
বাগেরহাটের রামপালে সংঘবদ্ধ ছিনতাই ও অপহরণকারী চক্রের নারী সদস্য'সহ ৭'জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার ১৬ জানুয়ারি রাত সোয়া ৯'টায় আদিল মাহামুদ নামের এক ভুক্তভোগী রামপাল থানায় হাজির হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গত মঙ্গলবার ১৬ জানুয়ারি ওই রাতেই রামপাল থানা পুলিশ বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে চক্রের প্রধান ও এক নারী সদস্যসহ সাতজনকে আটক করে।আটকদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও নগত টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। আটকদের বুধবার(১৭ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় বাগেরহাটের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আটকরা হলেন, রামপাল উপজেলার শ্রীফলতলা গ্রামের আত্মসমর্পণকারী বনদস্যু রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. শাহীন শেখ (২২), একই গ্রামের আবুল হাসেম শেখের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ শেখ (২০), ইব্রাহিম মোল্লার ছেলে আসলাম মোল্লা আকাশ (২০), গোলাপ শেখের ছেলে ইমন শেখ (১৭), উজিরের ছেলে ফেরদৌস হাসান জয় (১৭), মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে মো. রমজান শেখ (১৭) ও টিটু মোল্লার মেয়ে সুরাইয়া আক্তার টিনা (১৮)। পলাতক রয়েছে সিয়ামসহ অজ্ঞাত আরও ৩, ৪ জন।
থানার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বনদস্যু রফিকুল ইসলামের ছেলে শাহীন শেখ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে কথিত প্রেমিকা টিনাকে সাথে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাবহার করে একটি প্রতারক সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। তারা ওই নারী সদস্যকে দিয়ে প্রথমে প্রেমের ফাঁদ পাতে। এক পর্যায়ে তারা রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাওয়ার মেক লিমিটেড কোম্পানির ম্যানেজার আদিল মাহামুদকে ট্রাপে ফেলে। ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দেয় ওই নারী সদস্য। এক পর্যায় ওই সময় তাকে খুলনা মোংলা মহাসড়কের ভেকটমারী বেলাই ব্রীজের কাছে আসতে বলেন। আদিল মাহামুদ সেখানে গেলে আগে থেকে ওতপেতে থাকা ওই চক্রের সদস্যরা তাকে বেঁধে মাহিন্দ্রা গাড়িতে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এরপর তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়ে বেদমভাবে মারপিট করে। এক পর্যায়ে আসামিরা তার কাছে থাকে নগদ টাকা, একটি টিভিএস মোটরসাইকেল, এটিএম কার্ড ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এরপর তারা ভিকটিমের বাড়িতে ফোন করিয়ে কয়েক দফায় বিকাশ ও রকেট এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রায় ৮০ হাজার টাকার মত নিয়ে নেয়। রাত সাড়ে ১০টায় তাকে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার আগে আরও ৬ লক্ষ টাকা দাবি করে। মামলার অনুসন্ধানে ব্যবহৃত মাহিন্দ্রের ড্রাইভার মো. রবিউল ইসলামের সহযোগিতায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রতারক ওই চক্রের সদস্যদের আটক করা হয়।
এ বিষয়ে (রামপাল -মোংলা) সার্কেল এএসপি মুশফিকুর রহমান তুষার এবং রামপাল থানার ওসি (তদন্ত) বিধান চন্দ্র সাংবাদিকদের এক প্রেস ব্রিফিং এ এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আটক প্রতারক চক্র দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্নভাবে ফেসবুকের মাধ্যমে টার্গেট করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল। আমরা ওই চক্রের প্রধান হোতা শাহীনকে ও নারী সদস্যসহ সাত জনকে আটক করেছি। কয়েকজন পলাতক রয়েছে। এর সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কি না সেটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।