মোঃ শামীম হোসেন - খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ- ঘূর্ণিঝড় মিধিলি’র ঝড়-বৃষ্টিতে তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি মোংলায়। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে এখানকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ঝড়-বৃষ্টির কারণে শুক্রবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত পৌর শহরের প্রধান বাজারে তেমন কোন লোকজনও ছিলনা। শহরের দোকানপাট-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও ছিলো বন্ধ। ঝড়ের একটা প্রভাব ছিলো ভোর থেকে দুপুর পর্যন্তই। এ সময়ের বৃষ্টিতে শহর ও শহরতলীর নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাটে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। দুপুরের পর থেকে হঠাৎ করে কমে যায় বৃষ্টি-বাতাস। বিকেলে ও সন্ধ্যায় বাতাস না থাকলেও মাঝে মাঝে ঝরছে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। মুলত মিধিলি’র প্রভাবে শুক্রবার বন্দরে অবস্থানরত ১৫টি বিদেশী জাহাজের পণ্য ওঠানামা ও পরিবহন বন্ধ ছিলো। শনিবার থেকে পুনরায় স্বাভাবিক হয়েছে বন্দরের জাহাজের কার্যক্রম। এ এলাকার বিলাশ একটি জনগোষ্ঠীর প্রধান আয়ের উৎস চিংড়ি চাষ। ঝড়-বৃষ্টিতে প্রতিনিয়ত চিংড়ি ঘেরের মাছ বেরিয়ে গিয়ে আর্থিক ক্ষতি হলেও মিধিলিতে তেমন ক্ষতি হয়নি ঘের মালিকদের। উপজেলা সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টিতে ঘেরগুলোতে পানি বেড়েছে, তবে ডুবে মাছ ভেসে যাওয়ার মত পরিস্থিতি হয়নি। রাতে যদি বৃষ্টিপাত হয় সেই ক্ষেত্রে ক্ষতক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে। মিধিলির প্রভাবে বৃষ্টি ও বাতাসের তীব্রতার গতি শক্তি খুব বেশি না হওয়াতে মোংলার কোথাও পড়েনি গাছপালা ও ঘরবাড়ী। জোয়ারের পানিরও চাপ ছিলনা তেমন। ফলে রাস্তা, ভেড়ী বাঁধেরও কোন ক্ষতি হয়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ জাফর রানা, মিধিলি খুব বেশি শক্তিশালী না হওয়ায় ঘরবাড়ী, গাছপালা, রাস্তাঘাট ও বাঁধের কোথাও কোন প্রকার ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর দাশ বলেন, মিধিলি মোকাবেলায় সকল ধরণের প্রস্তুতি ছিলো উপজেলা প্রশাসনের। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতেও কোথাও কোন ক্ষতি হয়নি ঝড়-বৃষ্টি-বাতাসে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক নুর আলম শেখ বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন আমাদের মায়ের মতনই। এই সুন্দরবন আমাদের কাছে সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঢাল স্বরুপ। সুন্দরবনই বিভিন্ন সময়ে নিজের বুকে ঝড়-জ্বলোচ্ছাস আগলে নিয়ে আমাদেরকে রক্ষা করে আসছে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি, মিধিলি’র গতিকে স্লথ করে দিয়েছে সুন্দরবন। তাই আমরা নিরাপদ থাকতে পেরেছি। সুতরাং এ সুন্দরবনকে আমাদের সকলকেই এক হয়ে যে যার অবস্থান থেকে রক্ষায় কাজ করতে হবে। সুন্দরবন আমাদের দুর্যোগ রক্ষার ঢাল, তাই এ ঢালকে আমাদেরকেই সংরক্ষণ ও সুরক্ষা করতে হবে বলেই সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।