বাবুল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ মুক্তাগাছায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে একদল স্বেচ্ছাসেবী। উক্ত স্বেচ্ছাসেবী দলটি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), মুক্তাগাছা এর ‘ইয়ুথ এনগেজমেন্ট এন্ড সাপোর্ট’ (ইয়েস) এবং ‘অ্যাকটিভ সিটিজেন্স গ্রুপ’ (এসিজি) নামে পরিচিত। টিআইবি’র চলমান ৫ বছর মেয়াদী প্যাকটা প্রকল্পের আওতায় নানা ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে তারা এ কাজটি করে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরে ইতোমধ্যে তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ভূমি ও পরিবেশ খাতে বিদ্যমান সমস্যা, চ্যালেঞ্জ এবং উত্তরণের উপায় চিহ্নিত করার লক্ষ্যে প্যাকটা অ্যাপের মাধ্যমে ৯০টি কমিউনিটি মনিটরিং, সেবাগ্রহীতাদের অংশগ্রহণের ৫১টি কমিউনিটি অ্যাকশন সভা বাস্তবায়ন করেছে। উক্ত সভা থেকে প্রাপ্ত সমস্যাসমূহ সমাধানের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে ২৯টি অধিপরামর্শ সভা করেছে। এছাড়াও ১টি তথ্যমেলা ২টি গণশুনানি, ৩টি নাগরিক সমাবেশ, ৭টি দিবস উদযাপন, ২টি করে তথ্য ও পরামর্শ ডেস্ক ও তথ্য অধিকার বিষয়ক ক্যাম্পেইন বাস্তবায়ন করেছে। উক্ত প্রতিটি কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জনমানুষের মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী চেতনা তৈরী ও সোচ্চার করা এবং কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চিহ্নিত সমস্যার সমাধান করা। এছাড়া এই কার্যক্রমগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন ও ফলপ্রসূ করার জন্য নিয়মিত মাসিক সভা, সমন্বয় সভা, বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন।
সনাক মুক্তাগাছা সূত্রে জানা যায়, উক্ত ৪টি খাতভূক্ত ১০টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটিতে ১টি করে অ্যাকটিভ সিটিজেন্স গ্রুপ রয়েছে। যারা সংশ্লিষ্ট প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রতি মাসে ১টি কমিউনিটি মনিটরিং, প্রতি ২ মাসে ১টি কমিউনিটি অ্যাকশন সভা ও প্রতি ৩ মাসে ১টি করে অধিপরামর্শ সভা বাস্তবায়ন করেন। তারা মূলত সনাক ও ইয়েস সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত খাতভিত্তিক উপ-কমিটির সহযোগিতা, পরামর্শ এবং নির্দেশনায় এগুলো সম্পন্ন করেন। প্রতিটি গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছে ১ জন সমন্বয়ক ও ২ জন সহ-সমন্বয়ক। সহ-সমন্বয়কদের মধ্যে অবশ্যই ১ জন নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে। ১০টি এসিজি কমিটিতে ১৯৭ জন এবং ১টি ইয়েস গ্রুপে ৬৯ জন ইয়েস সদস্য রয়েছে যারা পড়াপশোনা ও পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি নিয়মিত এ কার্যক্রমগুলোতে অংশগ্রহণ করে থাকেন। টিআইবির নীতিমালা অনুসরণ করে কমিটিগুলো গঠণ করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য হলো প্রতিটি কমিটিতে ৪০% নারী ও ১৫% প্রান্তিক জনগোষ্ঠির প্রতিনিধি নিশ্চিত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা। যা নারীর ক্ষমতায়নে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত বলে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছেন।
উল্লেখ্য ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে সনাক ও এসিজি কর্তৃক উপজেলা ভূমি অফিস ও পৌরসভা মুক্তাগাছার সাথে অধিপরামর্শ সভা বাস্তবায়ন করা হয়। তাদের সুপারিশের আলোকে সহকারী কমিশনার ভূমি মহোদয় কর্তৃক সুশাসন নিশ্চিতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের প্রতি অফিস আদেশ জারি করেন।