মোঃ খাইরুজ্জামান সজিব
সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
চাকরি করি, চাকরি পাশাপাশি দালালি করি, চাকরি করে কয়ে টাকা পাই, দালালি করলে ভালো টাকা পাওয়া যায়, এমন বক্তব্য মিরপুর বিআরটিএ নিরাপত্তা দায়িত্ব থাকা আনসার সদস্যদের।
অভিযোগ রয়েছে, অফিসিয়াল ভাবে কোন নিয়োগ দেওয়া হয় নাই, তারপরেও কাজ করে আসছেন এক ডজন সাবেক আনসার সদস্যরা, এদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন অনিয়মে অভিযোগে চাকরিচ্যুত হয়েছেন। অনেকে সদিচ্ছা চাকরি ছেড়ে দালালির কাজে জড়িয়ে পড়ছেন। সাবেক ও বর্তমান কর্মরত আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালনের অজুহাতে গ্রাহকদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। অফিসের সরকারি গোপনীয় ও জরুরি ফাইলেও হাত বসাচ্ছে আনসার সদস্যরা।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, আনসার সদস্য নাজমুল চাকরি ছেড়ে মালিকানা শাখার দালালি করে। সহকারী পরিচালক করিম সাহেবের ব্যক্তিগত লোক বলে পরিচয় দেন নাজমুল। এ শাখায় দালাল নিয়ন্ত্রণ করেন নাজমুল প্রতিটি ফাইল থেকে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা নিয়ে থাকেন।
মহাসিন সাবেক আনসার সদস্য তিনি উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলামের রুমে কাজ করেন। বিআরটিএ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন তিনি। শুধু তাই নয়, রোড পারমিটে রয়েছে, নয়ন -১,নয়ন-২, খোরশেদ, খলিল সহ এক ডজন সাবেক আনসার সদস্য দালাল হিসেবে কাজ করেন মিরপুর বিআরটিএতে।
বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা যায়, নিরাপত্তা দায়িত্ব থাকা আনসার সদস্যরা টাকার বিনিময় দালালদেরকে সহযোগিতা করে আসছেন এর বিনিময় দালালদের কাছ থেকে প্রতি সাপ্তাহে ৫০০-৫০০০ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন। দালালদের কাছ থেকে সাপ্তাহে ২-৩ লক্ষ টাকা নিয়ে থাকেন আনসার কমান্ডার পিসি কাঞ্চন ও এপিসি মিলন। মিরপুর বিআরটিএ ঘিরে বিভিন্ন শাখায় ৯০-১০০ জন দালাল রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন দালাল জানান, আমরা দালালি করে খাই, আমরা লেখাপড়া জানিনা, তাই একমাত্র অবলম্বন পথ দালালি। এখানে কাজ করতে হলে, আনসার কমান্ডারকে টাকা দিয়েই কাজ করতে হয়। টাকা দিলে আমাদেরকে অফিসের ভেতরে ঢুকতে সুযোগ বা কাজ করতে দেয়ওয়া হয়। টাকা না দিলে হয়রানি ও ম্যাজিস্ট্রেটের ভয় দেখায়। আনসার কমান্ডারকে টাকা না দিয়ে এখানে কাজ করা অসম্ভব। আমাদের কাজের পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও দালালের কাজে জড়িত।
বিআরটিএ নিরাপত্তার দায়িত্বে প্রায়৩০ জন আনসার সদস্য রয়েছে। এদের মধ্যে প্রতিদিন কাজ করেন অন্তর, জাকিরুল, মো: আনিছ, শাহিন,আরিফ,শহিদুল, মো: রাজ্জাক, রবিউল ইসলাম, পবন, ইসমাইল, সহ অনেকের বিরুদ্ধে কাজ করা অভিযোগ। এদের জন্য আমরা বেশী একটা কাজ করতে পারি না।
বিআরটিএ অফিসে ঘুষ বাণিজ্য নতুন নয়, রয়েছে দালাল দৌরাত্ম্য, সেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বাধ্য হয়ে নিতে হয় দালাল বা আনসার সদস্যদের সহযোগিতা।
এদিকে দালাল, টাউট ও প্রতারক হতে সাবধান’। এমন সতর্কবার্তা সম্বলিত সাইনবোর্ড চোখে পড়বে রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ সড়ক পবিরবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) গেট দিয়ে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই। শুধু প্রবেশ ফটকেই নয়, এমন সতর্কবার্তা লেখা আরও অনেকগুলো সাইনবোর্ড সাঁটানো আছে মিরপুর বিআরটিএ এর বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে দেয়ালে। কিন্তু এই সতর্ক বার্তাকে ছাপিয়ে বলা যায় বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দালালদের দৌরাত্ম্যই পুরো বিআরটিএ ঝুরেই।
এ বিষয়ে বিভাগীয় পরিচালক মোঃ শহিদুল্লাহকে রুমে গিয়ে পাওয়া যায়নি।