অফিসকে একটি পরিবার বা সংসারের সঙ্গে অনায়াসে তুলনা করা যায়। এখানেও রয়েছে দ্বন্দ্ব-সংঘাত, মনোমালিন্য। অফিস সম্পর্কিত মানসিক চাপ কমাতে কিন্তু সহকর্মীদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখাটা জরুরি।
কেবল শক্তিশালী সহযোগী তৈরির জন্য নয়, সফল ও আত্মবিশ্বাসী কর্মী হয়ে ওঠার জন্যও ভালো সহকর্মী হওয়া প্রয়োজন। গবেষণা বলে, যাঁরা অফিসে সবচেয়ে ভালো বন্ধু ও সহকর্মী হয়ে উঠতে পারেন, তাঁদের উৎপাদনক্ষমতা বেশি হয় অন্যদের তুলনায়। কেননা, সহকর্মীদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকলে মানসিক অস্থিরতা কিছুটা হলেও কমে।
তবে সবার প্রিয় হওয়া সহজ কথা নয়। পেশাজগতে অধিকাংশই চান আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক রাখতে। খুব বেশি গভীর সম্পর্কে প্রবেশ করতে একরকম ভীতিই যেন কাজ করে অধিকাংশের মনে। এসব ছাপিয়েও হয়ে উঠতে পারেন ভালো সহকর্মী। সহকর্মীর মন জয় করার কিছু কৌশল জানিয়েছে জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট কিইউরিপোর্ট।
সহকর্মীদের আগ্রহের বিষয়ে জানুন
অফিসের বাইরে সহকর্মী কী করেন, এ বিষয়ে কি কখনো তাঁর কাছে জানতে চেয়েছেন? অধিকাংশ সময়ই আমরা বিষয়টি এড়িয়ে যাই। তবে ভালো যোগাযোগ তৈরির ক্ষেত্রে এটি কিন্তু করতে হবে। সহকর্মীর সঙ্গে চা বা কফি খেতে খেতে জিজ্ঞেস করতেই পারেন, তিনি বাসায় গিয়ে কীভাবে সময় কাটান বা ছুটির দিনগুলোতে কী করতে পছন্দ করেন।
দ্বান্দ্বিক বিষয়গুলো এড়িয়ে চলুন
বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, অফিসের রাজনীতি বেশ ভয়াবহ একটি বিষয়। সহকর্মীদের সঙ্গে বৈষম্য তৈরিতে এটি খুব শক্তিশালী। আবার সহকর্মীদের কাছে অবিশ্বস্ত হতেও কার্যকর। এ কারণে চেষ্টা করুন দ্বন্দ্বমূলক বিষয়গুলো এড়িয়ে যেতে। এতে অফিসের পরিবেশও নষ্ট হয়। এর বদলে ভালো কোনো বই, ভালো কোনো গান অর্থাৎ যেসব বিষয় দ্বন্দ্ব কম তৈরি করে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
হাসিখুশি থাকুন
সহকর্মীদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলুন। সকালে অফিসে গেলে ‘শুভ সকাল’ জানান বা বিদায়বেলায় সুন্দর করে বলতে পারেন ‘আসছি’। এই শিষ্টাচার আপনার প্রতি ধারণা বদলাতে সাহায্য করবে। সম্পর্ক সুন্দর করতেও সাহায্য করবে।
অফিসে অনুষ্ঠান আয়োজন
পয়লা বৈশাখ, পয়লা ফাল্গুন বা কোনো সহকর্মীর জন্মদিন—অফিসে বিশেষ দিনগুলো পালন করুন। উদ্যোক্তা হোন আপনিই। বিরক্তিকর মানুষ হওয়ার চেয়ে একটু প্রাণবন্ত, উচ্ছ্বাসপ্রবণ মানুষ তো হতেই পারেন, তাই না? এতে কিন্তু নিজেদের ভালো সময় কাটবে, আর সহকর্মীরাও আপনাকে পছন্দ করবেন। তবে অবশ্যই অফিস কর্তৃপক্ষের সম্মতি নিয়ে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করবেন।
শুনুন
প্রত্যেকেই আলাদা মানুষ, আলাদা সত্তার এবং প্রত্যেকেরই ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে, মত প্রকাশের অধিকারও রয়েছে। আর তাই মতগুলো শুনুন। নিজে কথা বলার চেয়ে অন্যের কথা শুনুন বেশি। আর সেটা শুনুন খুব মনোযোগ দিয়ে, যেন তিনি মনে করেন আপনি তাঁকে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
মোদ্দাকথা, নিজের মতো থাকুন। তবে ভালো ব্যবহার করুন। আর সহকর্মীরা শেষ পর্যন্ত আপনার সঙ্গে তখনই থাকবেন, যখন আপনি নিজেকে সৎ ও আসল মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করতে পারবেন।