বিলুপ্ত প্রায় সুপারি চাষকে ফিরিয়ে আনতে ইসহাক আলীর নতুন উদ্যোগ।
এস এম মনিরুজ্জামান মনি
বাগেরহাট জেলার ঐতিহ্য সুপারি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে।বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের খান জাহান আলী নার্সারির পরিচালক মাওলানা মোঃ ইসহাক আলী, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উন্নত জাতের সিঙ্গাপুর ও বার্মিজ জাতের সুপারির চারা উৎপাদন করে বিলুপ্ত সুপারি চাষকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা এবং স্বাবলম্বী হয়েছেন বলে তিনি জানান।
তার উৎপাদিত নার্সারির সুপারির চারা স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। মাওলানা মোঃ ইসহাক আলীর মতো ওই এলাকার অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে এ নার্সারিতে ।
খরচ বাদে বছরে চারা বিক্রি করে প্রায় ৩ লাখ টাকা আয় হয় হবে বলে জানান।’তিনি বলেন, একটি সুপারির চারা উৎপাদনে খরচ হয় ২৫ থেকে ৩০ টাকা। সেই চারা ১২ থেকে ২৪ মাসের মাথায় বিক্রি হয়। প্রতি পিচ ৫০-৬০ টাকায়।’
তিনি দেশের বিভিন্ন জায়গা গিয়ে উন্নত জাতের সুপারির বীজ সংগ্রহ করেন এবং পুরানো চাষীদের পরামর্শে সুপারির চারা উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেন ইসহাক আলী।
সুপারির চারা ছয় মাস থেকে এক বছরের মাথায় বিক্রি শুরু করা হয়।
এই কৃষক বলেন, ‘নার্সারি একটি লাভজনক ব্যবসা। এতে কোনও লোকসান নেই যদি বুঝে সঠিক নিয়মে বীজ বপন করা যায়।
এলাকাবাসী জানান, নার্সারি করে ইসহাক ব্যাপক লাভবান হয়েছে সেই সাথে এলাকায় প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেকে চারা নিতে আসেন।
ইসহাক আলীর ৮ টি বাগানে এলাকার বেকার শ্রমিকদের কাজের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ জন শ্রমিক তার নার্সারিতে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন।
মোঃ ইসহাক আলী বলেন, এই অঞ্চলে সুপারি চাষ লাভজনক। খুচরা ক্রেতাদের পাশাপাশি পাইকাররা আমার এখান থেকে সুপারির চারা কিনে নিয়ে যান।
৪নং ফকিরহাট সদর ইউপি চেয়ারম্যান শিরিনা আক্তার বলেন, দেশী সুপারির জন্য আমাদের এলাকা বেশ পরিচিতি রয়েছে এখন উন্নত জাতের সুপারির চারা রোপন করে আর্থিক সুফল ভোগ করছে এলাকার মানুষ। এখন অনেকে আর্থিক ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ফকিরহাট উপজেলার সিনিয়র কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন এ প্রতিবেদককে জানান, ছোট বড় কয়েকটি নার্সারি রয়েছে এ উপজেলাতে। সামাজিক বনায়ন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি সুপারি মানুষকে আর্থীক স্বচ্ছলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সুপারির নার্সারি সংখ্যা বাণিজ্যিকভাবে বাড়াতে মাঠপর্যায়ে কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তারা নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে তিনি জানান।
এস এম মনিরুজ্জামান মনি সাধারণ সম্পাদক ফকিরহাট সাংবাদিক ইউনিয়ন বাগেরহাট