মোঃ রাশিদুল হাসান জিহাদঃ মহাষষ্ঠীর আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে শুরু হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা । সারাদেশের সাথে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় ১টি পৌরসভাসহ ১০টি ইউনিয়নে ৯৯টি পূজা মন্ডপের মাধ্যমে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের শারদীয় দুর্গোৎসব ‘২৪ উদযাপন করে। ভোরের আলো ফোটার আগেই কলা বৌ স্নান,উলুধ্বনি,শঙ্খের ডাক,ধূপগন্ধী,মন্ত্রের মাধ্যমে চণ্ডীপাঠ,নবপত্রিকা,ঢাকের বাদ্য,অঞ্জলি প্রদানের মাধ্যমে দেবি দুর্গার জাগ্রত এ যেন এক মহাযজ্ঞ ! ষষ্ঠী থেকে বিজয়াদশমী’র সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ বিসর্জনের মাধ্যমে দেবী দুর্গার বিদায় জানায় ভক্ত কুল । শহরের নতুন বাজার ঐতিহাসিক আয়মন নদীসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সৌহার্দ্য,সম্প্রীতি,সহাবস্থান ও অসুরতা নির্মূলের প্রার্থনাসহ প্রতিমা বিসর্জ্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব ‘২৪ এর আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে । সারি সারি ট্রাকে বহনকারী দেবী দুর্গার বিদায় কালে ভক্ত কুল রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান ।
এদিকে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হওয়ার আগেই স্থানীয় উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন পূজা উদযাপন কমিটিসহ সর্বস্তরের ব্যক্তি,সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দের সাথে একাধিকবার প্রস্তুতিমুলক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। এ ছাড়া প্রতিটি পূজামণ্ডপে আনসার ভিডিপিসহ সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীসহ পুলিশ পর্যন্ত সর্বস্তরের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিক স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন ছিলো । ইতিমধ্যে পূজা পরিদর্শনে সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকতাসহ জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুফিদুল আলম ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ডঃ মোঃ মোখলেছ উর রহমান পৃথক পৃথক পূজা পরিদর্শন করেন । স্থানীয় পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ সার্বিক সহযোগিতার জন্য সেনাবাহিনীরসহ সিভিল প্রশাসনের স্থানীয় ও উর্ধ্বতন কর্মকতাদের ভূয়সী প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ।
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্বল নিদর্শন বলে ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃতি বলে ভক্ত অনুরাগীসহ সর্বস্তরের মানুষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মুক্তাগাছা উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক আতিকুল ইসলাম শারদীয় দুর্গোৎসব ‘২৪ উপলক্ষে পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তি,প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নেতৃবৃন্দকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
মুক্তাগাছা উপজেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ক্যাম্প কমান্ডার মেজর হাসান বলেন,দু-একটি স্থানে বিচ্ছিন্ন ঘটনা এড়াতে আমার নেতৃত্বে সেনাসদস্যদের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে নিরসন হয় এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে ছিলো । তিনি আরো বলেন,জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে মুক্তাগাছার মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি,পারস্পরিক মূল্যবোধ ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ও প্রশংসার দাবিদার ।