নিজস্ব প্রতিবেদক
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে লোকারণ্য অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণে। স্টলে স্টলে ভিড় বই প্রেমীদের।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে মেলার দুয়ার খোলার আগেই মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকারণ্যে কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না।
মেলায় কেউ সপরিবারে, কেউ বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে এসেছেন। অধিকাংশ নারীকে হলুদ শাড়ি, খোঁপায় ফুল ও মাথায় ফুলের মালা পড়তে দেখা গেছে। ছেলেদের অনেকেই পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে এসেছেন। তারা বইয়ের স্টলগুলোতে ভিড় করছেন। পছন্দের লেখকের বই কিনছেন। তবে, বই কেনার চেয়ে অধিকাংশ যুবক-যুবতী ঘুরতে এসেছেন।পাবনা থেকে আসা নয়ন জানান, এ বছর আজই মেলায় এসেছি। বন্ধুরা মিলে আগেই পরিকল্পনা করেছিলাম আজকে মেলায় ঘুরতে যাবো।টাংগাইল থেকে আসা চিত্র-পরিচালক মোঃ আলম বলেন, ছুুটির দিনে পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছি। আমার তেমন একটা বই পড়া হয় না। আমার স্ত্রী ও সন্তানদের বই পড়ার নেশায় আমাকে মেলায় নিয়ে এসেছে। তারা তাদের পছন্দের লেখকের বই দেখছে এবং কিনছে।লেখক বলছি মঞ্চ থেকে ইতিহাস-ঐতিহ্য সন্ধানী গবেষক ড. এম আবদুল আলীম বলেন বাংলা একাডেমি অমর একুশে বই মেলা এর সঙ্গে আমার একটা আত্মিক বন্ধন আছে,এই বন্ধন এর কারনেই এখানে এসে ভালো না লাগার কোন কারণ নেই, এবং তিনি আরও বলেন এ বছর অমর একুশে বইমেলায় আমি আজি প্রথম এসেছি। এ বছর এখন পর্যন্ত আমার চারটি বই প্রকাশিত হয়েছে, বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়েছে পাবনায় বঙ্গবন্ধু, আগামী প্রকাশনী থেকে প্রকাশ হয়েছে বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযুদ্ধ, তাম্রলিপি প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে বিশ শতকের বাঙালি মনীষা , এছাড়াও আরো দুটি বই প্রকাশের পথে সেটি অন্যপ্রকাশ থেকে ভাষা আন্দোলনের কংগ্রেস, আগামী প্রকাশনী থেকে আরো একটি সেটি হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের যে আন্দোলন সেই আন্দোলন বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা নিয়ে আরো একটি বই আগামী প্রকাশনী এবার পুনরায় মুদ্রন করবে ।ড. এম আবদুল আলীম লেখক বলছি প্রোগ্রাম শেষে বিভিন্ন স্টল ঘুরে পাঠকদের সাথে মোট বিনিময় ও বই উপহার দেন।
স্টল মালিক ও বিক্রয় প্রতিনিধিরা জানান, পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে মেলায় মানুষের ভিড় ছিল। মেলা জমে উঠলেও বিক্রি কম ছিল। অধিকাংশই ঘুরতে আসছেন। তবে, ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে মানুষের আরও ভিড় হবে। তখন বিক্রিও বাড়বে বলে আশা করছি। তখন ঘুরতে আসা মানুষের সংখ্যা কমে যাবে। যারা বই কিনবে তারাই মূলত মেলায় আসবে।এদিকে, বইমেলার প্রবেশ ও বাহিরপথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশ, র্যাব, আনসার ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য মেলায় এলাকাজুড়ে ৩০০ ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে।ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলা। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। আর ছুটির দিন বইমেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। তবে ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন মেলা সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে।