প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪, ১২:৩২ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ অগাস্ট ২৫, ২০২৩, ১০:৩৫ এ.এম
ফুলবাড়িয়ায় ভেজাল লাল চিনির কারখানা বন্ধে ইউএনও বরাবর অভিযোগ
খায়রুল বাশার ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় সাদা চিনি, লালি, সুডা, হাইড্রোজ ও লাল চিনির ফ্লেভার সহ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নানা ক্যামিকেলে ভেজাল লাল চিনির কারাখানা বন্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আখচাষীরা। বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহি অফিসার বরাবর আখ চাষীদের পক্ষে অভিযোগ দেন স্থানীয় চাষী নজরুল ইসলাম। আখচাষীরা অভিযোগে উল্লেখ করেন, উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নের পলাশতলী জলপাইতলা গ্রামের শামছ উদ্দিনের পুত্র আ: মজিদ এবং একই ইউনিয়নের বয়ারমারা গ্রামের মৃত ইসমাইল হোসেনের পুত্র আ: রশিদ এর নেতৃত্বে দুটি স্থানে ভেজাল লালচিনি তৈরি করে। প্রতিদিন রাত ১টা হতে সকাল ৮টা পর্যন্ত সাদা চিনি মেশিনের সাহায্যে মিশ্রন করে ভেজাল লাল চিনি তৈরি করে। স্থানীয় চাষীরা প্রতিবাদ করলেও তারা শোনছে না। এতে লালচিনির গুনগত মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। কারখানা দুটি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ৩৩ জন চাষী স্বাক্ষরিত একটি আবেদন উপজেলা নির্বাহি অফিসারের কার্যালয়ে জমা দেন। স্থানীয়রা জানান, পনের সদস্যের একটি শক্তিশালী চক্র এ কাজে সহযোগিতা করে থাকেন। পলাশতলী বাজার থেকে শুরু করে বিভিন্ন পয়েন্টে লোক সেটিং দেওয়া আছে। তারা প্রশাসন অথবা অপরিচিত লোকজন চোখে পড়লেই মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠিয়ে দেন কারখানার মালিকদের কাছে। এই কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি নিকটাআত্তীয়দের বিভিন্ন বাড়িতে রাখেন। প্রতিদিন রাতে ফুলবাড়িয়া বাজারের পাইকারি দোকান হতে ভ্যানযোগে সাদা চিনি নির্ধারিত স্থানে পৌঁছায়। পরিবেশ বুঝে কাজ শুরু হয়। লাল চিনির ফ্লেভার, ভাঙ্গা সাদা চিনি, লালি, হাইড্রোজ, সুডা দিয়ে তৈরি করা হয় ভেজাল আখের গুড় ও লাল চিনি। এগুলো প্যাকেট করে রাখা হয় বিভিন্ন দোকানে। যা খুঁজে পাওয়া দু:স্কর। অর্জিনাল লাল চিনি ও ভেজাল লাল চিনি বা গুড় সাধারণ ভোক্তাদের চেনার কোন সুযোগ নেই। কারখানা দুটি হতে প্রায় অর্ধশত ব্যক্তি সুবিধা নিয়ে থাকেন। তাই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া অনেকটা কঠিন। বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাদা চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১২৮-১৩০ টাকা আর সেই চিনি দিয়ে তৈরি ভেজাল লাল চিনি বিক্রি প্রতিকেজি ১৫০ টাকায়। অর্জিনাল লাল চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৮০-২০০ টাকায়। ভোক্ত দোকানে গিয়ে দেখেন দোকানিরা ৫/৬ আইটেমের চিনি নিয়ে বসে আছেন ভোক্তাদের পছন্দমত চিনি তারা সরবরাহ করে থাকেন। ভোক্তার যেহেতু ভেজাল ও নির্ভেজালের বিষয়টি জানা নেই সেহেতু তিনি দামের প্রকার ভেদে মজাদার চিনির পরিবর্তে ভেজাল চিনি ক্রয় করে প্রতারিত হচ্ছেন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হারুন আল মাকসুদ বলেন, লালি, সুডা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এসব মিশ্রণে মানব দেহে ক্যান্সার, কিডনী সমস্যা, গ্যাস্ট্রিক আলসার সহ নানা প্রকার মারাতœক রোগ বাসা বাঁধতে পারে। এসব মিশ্রণ খাবার হতে দূরে থাকতে হবে। উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোহাম্মদ নাহিদুল করিম বলেন, ইতিপূর্বেও এ জাতীয় অভিযোগ করে আবার অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই অভিযোগ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Copyright © 2024 Amar Sangbad Pratidin. All rights reserved.