মোঃ শামীম হোসেন - খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ- মিশ্র ফল চাষী ও দেশী-বিদেশী গাছের চারা উৎপাদনকারী হিসেবে তরুণ উদ্যোক্তা সম্মাননা পেয়েছেন পাইকগাছার তরুণ উদীয়মান সফল কৃষি উদ্যোক্তা মোঃ বেলাল হোসেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু’র মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে বেলাল হোসেনকে তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, উপজেলার সিলেমানপুর গ্রামের নূর আলী গাজীর ছেলে বেলাল হোসেন ইতোমধ্যে ডিগ্রী পাশ করেছেন। তার বর্তমানে ২০ বিঘা জমিতে মিশ্র ফলের বাগান ও নার্সারী রয়েছে। স্কুল জীবন থেকেই কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে বেলাল হোসেন। ২৫ বছর আগে ৮ম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ২ হাজার ৭শ টাকা পুজি নিয়ে ৬ কাঠা জমিতে নার্সারী শুরু করে বেলাল হোসেন। সেই থেকে নার্সারীতে চারা উৎপাদন করে আসছিল বেলাল। অনেকেই তার নার্সারী থেকে চারা নিয়ে ফল বাগান করে লাভবান হওয়ায় নার্সারী পাশাপাশি ফল বাগান করার উদ্যোগ নেয় তরুণ উদ্যোক্তা বেলাল হোসেন। বর্তমানে তার ২০ বিঘা জমিতে মিশ্র ফলের বাগান এবং ফলের বাগানের সাথে নার্সারী রয়েছে। তিনি ৩ বিঘা জমিতে গোল্ডেন ৫ ও গোল্ডেন ৮ জাতের পেয়ারা বাগান করেছেন। ১০ বিঘা জমিতে তার কুল বাগান রয়েছে। এখানে তার বিদেশী জাতের ভারত সুন্দরী, বল সুন্দরী, কাশ্মির সুন্দরী জাতের কুল রয়েছে। ৪ বিঘা জমিতে আমের বাগান রয়েছে, এখানে রেড আই ভেরী, থ্রী টেস্ট, ব্রæনাই কিং, শ্রাবণী, বিএন-৭, জাপানী জিয়াজাকি সূর্য ডিম, সুপার সিন্ধু, আলপানসু, ডগ মাই, রেড তোতাপুরী, কিং অব চাকাপাত, কিউজাই, বারো মাসি থাই কাটি মুন, বারী-৪, বারী-১১, বারী-১৩, গৌরমতি, আমেরিকান রেড পলমার, তাইওয়ান রেট, ব্যানানা ম্যাংগো, ব্লাক স্টোন হানিডিউ, বেনিসন আম্পুনা, থাই বারোমাসি, রেড বারোমাসি, শীতা ভোগ, মাল দই, রাজভোগ, বাদশা ভোগ ও বেন খাস জাতের আম রয়েছে। ৪ বিঘা জমিতে রাজশাহী বোম্বাই (মোজাফফর), চায়না থ্রী, বেদনা লিচু, বোম্বাই লিচু, থাই লংগান, রেড লংগান, হোয়াইট লংগান, রাম ভুটান জাতের লিচু রয়েছে। ৪ বিঘা জমিতে বেড ভেল ভেট, থাইরেট, আমেরিকান রেট, বাউ-২, ইয়োলো ড্রাগন ও হোয়াইট ড্রাগন করেছে। ৪ বিঘা জমিতে বারী-১ মাল্টা, ভিয়েতনামী মাল্টা, ইয়োলো মাল্টা, দার্জিলিং কমলা, চায়না কমলা ও মেন্ডারীন কমলা রয়েছে। ফল বাগান ও নার্সারী প্রসঙ্গে তরুণ উদ্যোক্তা বেলাল হোসেন বলেন স্কুল জীবন থেকে আমি কৃষি কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট রয়েছি। মাত্র ২৭শ টাকা নিয়ে আমি নার্সারী ব্যবসা শুরু করি। বর্তমানে আমার ২০ বিঘা জমিতে ফলের বাগান রয়েছে। শতভাগ সঠিক জাতের চারা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি বাগানের সাথেই নার্সারী রয়েছে। প্রতিদিন আমার ফল বাগানে ২০ জন শ্রমিক কাজ করে থাকে। বছরে বাগান থেকে ২০ লাখ টাকার ফল ও ১০ লাখ টাকার চারা উৎপাদন হয়ে থাকে।
সদ্য বিদায়ী উপজেলা কৃষি অফিসার জাহাঙ্গীর আলম জানান, বেলাল হোসেন অত্র এলাকার একজন আদর্শ তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা। তার ফল বাগানের সফলতা দেখে অনেক শিক্ষিত বেকার যুবকরা ফল বাগান করতে এগিয়ে এসেছে। তার এই সফলতার জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে বেলাল হোসেনকে তরুণ উদ্যোক্তার সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে বলে কৃষি বিভাগের এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।