পাহাড় কাটার অভিযোগে চসিকের কাউন্সিলর ও পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা
মাসুদ পারভেজ
পাহাড় কাটার অভিযোগে চসিকের কাউন্সিলর ও পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা
অনুমতি ছাড়াই প্রায় ৫০ হাজার ফুট পাহাড় কাটার অভিযোগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রকল্প পরিচালক ও এক কাউন্সিলরসহ ৭ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় আকবর শাহ থানায় মামলা দায়ের হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাছান আহম্মদ বাদী হয়ে এ মামলা করেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক জাগো নিউজকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার আসামিরা হলেন চসিকের প্রকল্প পরিচালক নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাদাত মোহাম্মদ তৈয়ব, উপ-প্রকল্প পরিচালক নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী ওয়ালী আহমেদ, ঠিকাদার এবি-হক ব্রাদার্সের স্বত্ত্বাধিকারী ওমর ফারুক, তার স্ত্রী তাকিয়া বেগম, স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম ও স্থানীয় মোহাম্মদ ইসমাইল।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ‘ডেভেলপম্যান্ট অফ লেইন বাই লেইন ইন আকবরশাহ এরিয়া, ৯ নম্বর নর্থ পাহাড়তলী ওয়ার্ড’ নামে একটি প্রকল্পের আওতায় আকবরশাহ থানাধীন বেলতলীঘোনা এলাকায় সড়ক নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। সড়কটি নির্মাণের আগে পাহাড় কাটার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে কোনো পূর্বানুমতি নেওয়া হয়নি। উপরন্তু স্থানীয় কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমের নির্দেশে মোহাম্মদ ইসমাইল পাহাড় কাটছিলেন। পাহাড়াটি স্থানীয় ব্যক্তি মালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংক অফিসার্স কো- অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড।
পাহাড় কেটে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে মানববন্ধন
এর আগে ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঘটনাস্থলে এনফোর্সমেন্ট পরিচালনা করে পাহাড় কাটার সত্যতা পায় পরিবেশ অধিদপ্তর। পরবর্তীতে গত ৫ জানুয়ারি পাহাড় কাটা বন্ধ করার জন্য অগ্রণী ব্যাংক অফিসার্স কো- অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডের পক্ষ থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এরপর ১০ জানুয়ারি এবং ৩১ জানুয়ারি শুনানিতে ডাকা হলেও সিটি করপোরেশনের কোনো প্রতিনিধি হাজির হননি। তবে রাস্তা নির্মাণের দরপত্র মোতাবেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবি হক ব্রাদার্সকে রাস্তা নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
সম্প্রতি পাহাড় কাটার সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালক করে শাহজাহান নামের এক এস্কেভেটর চালককে ৭ দিনের কারাদণ্ড দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। স্থানীয় কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমের নির্দেশে পাহাড় কাটা হচ্ছিল বলে পরিবেশ অধিদপ্তরের জিজ্ঞাসাবাদে জানায় এস্কেভেটর চালক শাহজাহান।
এদিকে, সর্বশেষ গত ৭ এপ্রিল একই স্থানে পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণের সময় পাহাড় ধসে মজিবুর রহমান খোকা (৪৫) নামে এক শ্রমিক নিহত হন। এসময় আরও ৪ শ্রমিক আহত হন।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে অন্য কারো জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদেরকেও আসামি করা হবে বলে জানায় পরিবেশ অধিদপ্তর।