মোঃ রাজিব জোয়ার্দ্দারঃ
পাবনায় বিএনপি ও দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের নামে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও চাঁদাবাজি করলে দায়ী ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন দলটির জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা। তাঁরা বলেন, দলের যত বড় নেতা-ই হোক, তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে দলের কোনো নেতা শক্তি প্রদর্শন করতে আওয়ামী লীগের কোনো কর্মীকে সঙ্গে নিলে তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এসব কথা বলেন। সেই সঙ্গে বাসস্ট্যান্ড, অটোরিকশাস্ট্যান্ড, বিপণিবিতান, বালুমহালসহ যেকোনো জায়গায় চাঁদাবাজি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য উপস্থাপন করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছর বিএনপি নেতা-কর্মীরা অনেক ত্যাগস্বীকার করেছেন। জেল-জুলুম সহ্য করেছেন। শত শত নেতা আত্মত্যাগ করেছেন। স্বৈরাচার সরকার পতনে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন। বিএনপির সেই আন্দোলনকে বেগবান করে দিয়েছেন ছাত্ররা। ছাত্র-জনতার গণজাগরণের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়েছে।
বিএনপির এই নেতার দাবি, সরকার পতনের পরই কিছু মানুষ দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন; সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন; বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দিচ্ছেন; ডাকাতি–চাঁদাবাজি–লুটতরাজ করছেন। এরা কেউ বিএনপির লোক না। পাবনায় যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, তাদের বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী চেনে না। যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে, তারা সুবিধাবাদী ও সন্ত্রাসী। বিএনপি তাঁদের প্রতিহত করতে কাজ করবে।
হাবিবুর রহমান আরও বলেন, বিএনপি কখনো সন্ত্রাস–নৈরাজ্যকে প্রশ্রয় দেয় না। বিএনপির ও দলের অঙ্গসংগঠনের নামে কেউ যদি সন্ত্রাস–নৈরাজ্য ও চাঁদাবাজি করে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাংগঠনিক ব্যবস্থার পাশাপাশি আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের বিএনপির কিছু নেতা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্মীদের কাছে ভেড়াচ্ছেন জানিয়ে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না। বিএনপির আর কোনো নেতা-কর্মীর প্রয়োজন নেই। কেউ যদি অন্য কাউকে সঙ্গে নিয়ে নিজের শক্তি বাড়াতে চান, তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পাবনাবাসীর উদ্দেশে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আজ থেকে কেউ চাঁদা দেবেন না। কোনো বা স্ট্যান্ড, অটোরিকশাস্ট্যান্ড, রিকশাস্ট্যান্ড কোথাও আর চাঁদাবাজি চলবে না। কেউ যদি চাঁদা চায়, জেলা বিএনপিকে জানাবেন। জেলা বিএনপি চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। এ ছাড়া দলটির কোনো নেতা-কর্মী কাউকে হুমকি দিলে, ভয় দেখালে সেটিও জানাবেন। বিএনপি ব্যবস্থা নেবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর মধ্যে আজ শুক্রবার জুমার নামাজের খুতবায় নিহত ছাত্র-জনতার আত্মার শান্তি কামনায় ইমামদের প্রতি বিশেষ দোয়ার আহ্বান জানান। আজ জুমার নামাজের পর জেলা সদর এবং আগামীকাল শনিবার আট উপজেলার সব মন্দির-গির্জাসহ ধর্মীয় উপাসনালয় পরিদর্শনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সংবাদ স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাসুদ খন্দকার। উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুস সামাদ খান, নূর মোহাম্মদ মাসুম ও আনিসুল হক, সাবেক আহ্বায়ক আজিজুর রহমান, সদস্য আহম্মেদ মোস্তফা প্রমুখ।