নিজস্ব প্রতিনিধি : আরিফ খান (জয়)
পাবনা চাটমোহর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ভেকু মেশিন দ্বারা মাটি কেটে তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন ও জলাশয় তৈরি করার মহোৎসব চলছে।
স্থানীয় প্রশাসনের নিষেধ অমান্য করে এসব কাজ করছেন এলাকার প্রভাবশালী মহল। উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতে পরিচালনা করেও বন্ধ করতে পারছে না।
তিন ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করায় জলাশয়ে পরিণত হচ্ছে আবাদি জমির মাঠ।
অবৈধভাবে চলছে তিন ফসলি জমির মাটি কাটার কাজ। প্রশাসনের নজর ফাঁকি দিয়ে কোনো প্রকার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই এ সব মাটি যাচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায়।
জনপ্রতিনিধিসহ রাজনৈতিক পরিচয় বহন করে করছে এ মাটি ব্যবসা। আবার বড় বড় নেতাদের পরিচয় দিয়ে তাদের সাঙ্গোপাঙ্গরা করছে এই ব্যবসা। অবৈধভাবে মাটি কাটার কারণে কৃষি আবাদ কমে যাচ্ছে – ফসলি জমি পরিণত হচ্ছে জলাশয়।
জানা গেছে উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের সিদ্দিক নগর, বাগলবাড়ি,বেলঘড়িয়া,নবীন, নাঙ্গলমারা এলাকাসহ মোট পাঁচটি মহলে প্রতিদিনই সকাল-সন্ধ্যা ভেকু মেশিন দিয়ে জমি কাটার মহোৎসব চলছে।
প্রতিবেদকের পরিদর্শনে দেখা যায় মাটি ব্যবসায়ীরা প্রায় ১৫- ২০ ফুট গর্ত করে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটায়, এতে পাশের ফসলি জমি ভেঙে পড়ছে।
আবার কোনো ব্যবসায়ী কৃষকের রোপণকৃত ফসলি ক্ষেতের উপর দিয়ে নিচ্ছে রাস্তা। এতে ক্ষতি হচ্ছে ফসল, প্রতিবাদ করলে মামলা দেওয়ার হুমকি। এলাকাবাসী জানায়, এসব মাটি ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষমতাশালী, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তারা মামলা হামলার হুমকি দেয়। আর ট্রাক দিয়ে মাটি নেওয়ার সময় রাস্তার ধুলায় রাস্তার পাশে থাকা ফসলের মধ্যে ধুলার প্রলেপ পড়ে যায়, শুধু তাই নয়, ধুলা ঢুকে যাচ্ছে বাড়িঘরের ভেতর।
সরকারি বিধিমালায় ফসলি জমিতে মাটি কেটে পুকুর খনন করা নিষেধ থাকলেও নির্দেশনা মানছে না মাটি ব্যবসায়ীরা। ক্ষমতাসীন দলের একজন প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় থাকা এসব মাটির ব্যবসায়ীরা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে বেআইনি কাজ করছেন বেশ দাপটের সাথে।
উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক অভিযান পরিচালনা করার পরপরই প্রশাসনের লোক চলে আসার পর আবার শুরু হচ্ছে মাটি কাটার কর্মযোগ্য ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, হান্ডিয়াল ইউনিয়নের সিদ্দিক নগর মাটি কাটার নেতৃত্ব দিচ্ছেন মতিন নবীন,নবী এলাকায় মাটি কাটার মহল পরিচালনা করছেন জহুরুল ইসলাম জুহু, নাঙ্গলমারা মাটি কাটার মহল পরিচালনা করছেন তারা হোসেন, বোঘলবাড়ি মাটিকাটা মহল পরিচালনা করছেন রওশন আলী ও বেলঘড়িয়া মাটিকাটা ও মহলের মাটির ব্যবসা রিপন মেম্বারের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়।
চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেদয়ানুল হালিম বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে এবং অভিযান চলমান রয়েছে।
পাবনা জেলা প্রশাসক মু. আসাদুজ্জামান জানান লিখিত কোন অভিযোগ পায়নি তবে মৌখিকভাবে ঘটনার কথা শুনেছি চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।