এস এম আলমগীর চাঁদ ( পাবনা প্রতিনিধি )
সোনালী আঁশের ভান্ডার খ্যাত পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলা । পাবনা জেলায় উৎপাদিত পাটের অধিকাংশই এ এলাকাতে উৎপাদিত হয়ে থাকে । কিন্তু হঠাৎই পাটের দাম অত্যধিক কমে যাওয়ায় শংকিত এ এলাকার কৃষকেরা ।হঠাৎই মনপ্রতি প্রায় ১০০০ টাকা কমে যাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের ।
কৃষকেরা জানান, বিগত বছরবছরগুলোতে পাটের দাম মোটামুটি ভালই ছিল । বিক্রি করে তারা ভালো দামও পেত । বিগত বছরের তুলনায় বীজ, কীটনাশক ও চাষের মুল্য বেড়ে যাওয়ার পরেও লাভের আশায় তারা বেশি পরিমাণে পাট চাষ করেছিল । কিন্তু হঠাৎই পাটের দাম কমে যাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের ।পাটের দাম আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কাআশঙ্কায় রয়েছেন তারা ।
এর ফলে আগামীতে পাট চাষ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অনেক কৃষক ।
কৃষকেরা জানান, গত বছরে প্রায় ৩ হাজার টাকা মন পাট বিক্রি করেছিল তারা । তাতে মোটামুটি লাভের মূখ দেখেছিল তারা । কিন্তু এ বছর ২ হাজার টাকার কম দরে পাট বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের ।
এছাড়া পাটের মান ভেদে কিছু কিছু পাট ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা দরে ও বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের ।অথচ উৎপাদন খরচ মনপ্রতি ২ হাজার ৪০০ টাকার বেশি খরচ করতে হয়েছে তাদের ।
তারা আরও জানান, গত বছর তাদের বিঘা প্রতি উৎপাদন খরচ হয়েছিল দশ থেকে ১৫ হাজার টাকা।আর এ বছর তাদের খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকার বেশি ।
পাটের দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে কৃষকেরা জানান, চলতি বছর পাট উৎপাদনে ধাপে ধাপে খরচ করতে হয়েছে তাদের । বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে ।পার্শ্ববর্তী খাল বিলে পানি না থাকায় শ্যালো মেশিন দিয়ে পুকুরে সেচ দিয়ে পাট জাগ দিতে হয়েছে অনেককেই ।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, চলতি বছরে সাঁথিয়া উপজেলা তে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭ হাজার ৮০০ হেক্টর । কিন্ত মোট পাট আবাদ হয়েছিল ৭ হাজার ৮৪৫হেক্টর ।
সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফারুক হোসেনে জানান, অনুকূল আবহাওয়া না থাকায় এবং খরার কারনে এ বছর পাটের উৎপাদন কম হয়েছে । তিনি বলেন বিগত বছর প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২মন পাট পাওয়া গেলেও এ বছর উৎপাদিত হয়েছে ৭ থেকে ৮ মন । এছাড়াও পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ার কারনে পাট জাগ ও ছড়াতে বেশি শ্রমিকের দরকার হয়েছে । সব মিলিয়ে খরচও কিছুটা বেশিই হয়েছে কৃষকের ।
কিন্ত এই মুহূর্তে পাটের উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের ।