পাবনা জেলা প্রতিনিধিঃ-আরিফ খান (জয়)
অস্বাভাবিক লাগামহীন ভাবে বাড়ছে দেশীয় প্রজাতি মাছের। পুকুরে চাষকৃত মাছসহ দেশি প্রজাতির কোন কোন মাছে দাম বেড়েছে দ্বিগুণ পর্যন্ত। গত কয়েক মাস ধরেই অস্বাভাবিকহারে বেড়েছে সব ধরনের মাছের দাম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাছের উৎপাদন কমে সরবরাহ সংকটে দাম বেড়েছে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্টের কারণে খাল-বিলসহ উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ মিলছে না দেশিও মাছ।চলতি বছরের শুরু থেকেই মাছের দাম বাড়তি। আগে যেখানে এক কেজি ওজনের রুই মাছ কিনতে খরচ পড়তো ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, বর্তমানে দাম বেড়ে তা পড়ছে ২২০ থেকে ২৬০টাকা পর্যন্ত। কাতল, মৃগেল, কার্পজাতীয় মাছসহ দেশি প্রজাতির পুঁটি, টেংরা, কই, বাতাসি, মলা, শিং, মাগুর, শাটিসহ এসবের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ পর্যন্ত।
পাবনা জেলার বিভিন্ন বিল অঞ্চলের বাজার ঘুরে দেখা যায়।চাটমোহর বাজার,কাশিনাথপুর বাজার, সুজানগর বাজার, এবং আতাইকুলা বাজারের খুচরা মাছ ব্যবসায়ী করিম হোসেন বলেন,চলতি বছরের শুরু থেকেই মাছের দাম বাড়তি। মূলত পাইকারি বাজারগুলোতে চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ কম থাকায় দাম বেশি। পাবনার বড়বাজার, মাসুম বাজার, অনেক মাছ ব্যবসায়ি বলেন, পাইকারি বাজারগুলোতে বিগত কয়েক মাসের মধ্যে মাছের সরবরাহ সবচেয়ে কম। বড় বাজার, মাসুম বাজার, প্রধানত উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে চাষের মাছও বিলের মাছ বেশি আসে, কিন্তু গত কয়েক মাস হলো মাছের সরবরাহ কমে অর্ধেকে নেমেছে। তিনি আরও বলেন, আগে এই বাজারে অনেক মাছ সরবরাহ থাকতে।
দেশি প্রজাতির পুঁটি, টেংরা, কই, মাগুর, শোল ও মলা-ঢেলা মাছ আগে বিভিন্ন ভাবে ধরা পড়লেও এখন তা না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে স্থানীয়দের। বর্ষায় ডোবা-নালা, খাল-বিল এবং আমনের জমিতে পর্যাপ্ত দেশি প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। তবে এবার বর্ষার তেমন প্রভাব পড়েনি এই অঞ্চলে। যার কারণে আমন রোপণেও দেরি হয়। কৃষক ফজলু মিয়া প্রতি বর্ষায় মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ ধরেন। জানতে চাইলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাছের দামের ব্যাপারে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাজারে অন্যান্য পণ্যের যে দাম সেই হিসেবে মাছের দাম বেশি নয়। কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, গত কয়েক বছরে মাছের খাবারসহ মাছ চাষের অন্যান্য সবকিছুর দাম বেড়েছে, সেই অনুপাতে মাছের দাম না পেলে মানুষ মাছ চাষে নিরুৎসাহিত হবে। মাছের দাম স্বাভাবিক দাবি করেন তিনি। মুক্ত জলাশয়ে মাছ মিলছে না, জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, মূলত কৃষি উৎপাদন বাড়াতে গিয়ে জমিগুলোতে অবাধে রাসায়নিক ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায়,নিষিদ্ধ চায়না জাল,নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, ব্যবহারে অনেক প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে।