মোঃ শামীম হোসেন – খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ- প্রবল বৃষ্টি ও পূর্ণিমার জোয়ারে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মোংলার দিগরাজ এলাকার রাস্তাঘাট, বাড়ি- ঘর ও সড়কে পানিতে থৈ থৈ ভোগান্তিতে এলাকাবাসী। এলাকা ঘুরে দেখা যায় দিগরাজ ব্যাংক রোড, শান্তি নগর আবাসিক এলাকা, কলেজ রোড, দিগরাজ বাস স্ট্যান্ড থেকে দিগরাজ খেয়াঘাট, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন ও বিজিপি ক্যাম্পের সামনের রাস্তা পানিতে তুলিয়ে যাওয়ায় রাস্তা দিয়ে গাড়ি, স্কুলগামী ছেলে – মেয়ে ও জন সাধারণের চলাচলে দারুণ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যেন দেখার কেউ নেই। এলাকাবাসী জানায় বর্ষার সময়ে এলে প্রবল বৃষ্টি ও পূর্ণিমার জোয়ারে মোংলার পশুর নদী ও বিভিন্ন খালের পানি বৃদ্ধি পায়। এতে দিগরাজ ঘাটের রাস্তা, ব্যাংক রোড, শান্তি নগর আবাসিক এলাকা ও কলেজ রোডের রাস্তা পানিতে ডুবে যাওয়ায় রাস্তা দিয়ে যাওয়া- আশায় সকল যানবাহন ও জন সাধারণের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এছাড়াও নিচু এলাকা ও নদীর তীরে চর এলাকায় বসবাসকারীদের ঘর-বাড়িতে পানি উঠে মানবতার জীবন-যাপন করছেন তারা। শান্তি নগর আবাসিক এলাকায় বসবাসরত জামাল মিস্ত্রি, মোতালেব কুক, সালেক, আব্দুল মোমিন, পারবেজ বলেন প্রবল বৃষ্টি ও নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে এছাড়া মোংলা বন্দরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সমস্ত পানি রাস্তা গড়িয়ে এসে আমাদের এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আমরা বারবার এলাকার ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না। কেউ বিষয়টি আমলে না আনায় বৃষ্টি হলেই এবং পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায় এমন অবস্থায় কিভাবে লোকজন ও গাড়ি চলাচল করবে বলতে পারেন। তারা আরো বলেন এখানেই শেষ না পানি সরে যাওয়ার পর রাস্তার বালি ধুয়ে যাওয়ায় ইট উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তে পরিনত হয় যা আর সারা হয় না। ফলে রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল ও জন সাধারনের চলাচলে দারুণ বিঘ্ন ঘটছে। অথচ মোংলা বন্দর বা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে সরকারি কোন বরাদ্দ দিয়ে যদি রাস্তার পাশে যে ড্রেন আছে এটাকে কাটিয়ে ঠিক করে দিতো তাহলে পানি সরবরাহে আর কোন অসুবিধা হতো না। ফলে বর্ষা ও জোয়ারের পানিতে আর রাস্তা তুলিয়ে যেত না আমাদের রাস্তা ঠিক থাকতো।
সোমবার (০২ রা অক্টোবর) সকালে প্রবল বৃষ্টি ও দুপুরের জোয়ারে হঠাৎ করে নদী-খালের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দিগরাজ শান্তি নগর আবাসিক এলাকা, ব্যাংক রোড, কলেজ, বাস স্ট্যান্ড, কোস্ট গার্ড, বিজিপি ক্যাম্প, দিগরাজ খেয়াঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পশুর নদীর তীরে থাকা ঘাট এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া বিদ্যারবাহন স্থানীয় বাসিন্দা কাদের বলেন, প্রচুর বৃষ্টি ও পশুর নদীতে প্রবল পানি বৃদ্ধির কারণে ঘরের মধ্যেও পানি উঠে গেছে। ছাগল ও গবাদি পশু নিয়ে তারা বিপদে পড়ে গেছে। আর পানি ওঠায় রান্না-বান্না বন্ধ রয়েছে তাদের।
দিগরাজ খেয়াঘাট এলাকার মনির দোকানদার বলেন, আষাঢ়-শ্রাবণ- ভাদ্র মাস আসলে খুবই কষ্টে থাকতে হয়। মাঝে মাঝেই পানি উঠে যায়। নদীর তীরে উঠা নামার এ রাস্তাটা যদি একটু উঁচু করে বাঁধ দেওয়া থাকতো, তাহলে আমরা কিছুটা শান্তিতে পার হতে পারতাম। কলেজ রোডের স্বিদ্ধার্থ ডেকোরেটর মালিক বলেন, চারপাশে দোকান আর বাড়ি-ঘর থাকায় বৃষ্টি হলেই পানি সরার জায়গা না থাকায় রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায় ফলে স্কুল, কলেজ ও বাস স্ট্যান্ডে যাওয়ার উপায় থাকে না এলাকার শিক্ষার্থী ও জনসাধারণের। এছাড়াও হঠাৎ করে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশ কিছু পরিবার এবং আমার দোকানের ডেকোরেটর দোকানে যাতায়াতের পথে জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। মাঝে মাঝে বৃষ্টি থাকায় পানি সহজে নামছে না।
এছাড়া দিগরাজ খেয়াঘাট দিয়ে বাস স্ট্যান্ড যাওয়ার রাস্তাটি, সেখানেও একই অবস্থা। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে ফলে বাজুয়ার পার থেকে যাওয়া হাজার হাজার মানুষের আর দুঃখের শেষ নাই। এছাড়া প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে শত শত যানবাহন তাদের ও দুঃখের শেষ নাই। এলাকার সাধারণ জনগণের দাবি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক এই সকল সমস্যা নিরসনের জন্য। তা না হলে যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় কোন দুর্ঘটনা। স্থায়ী সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এলাকাবাসী।