ঝালকাঠিতে বাস দূর্ঘটনার ৩২ ঘন্টায়ও মামলা হয়নি ॥ কমিটির তদন্ত শুরু,
সফিকুল ইসলাম হিরু ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির ছত্রকান্দা এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের পুকুরে পড়ে যাত্রীবাহী বাসের ১৭জনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটনার ৩০ ঘন্টা পার হলেও কোন মামলা হয়নি। থানা পুলিশ বলছে নিহত বা আহতদের পরিবার মামলা দায়েরে রাজী না হওয়ায় মামলা দায়েরের বিষয়ে অপেক্ষা করা হচ্ছে। তবে জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কাজ শুরু করেছে। আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে সরকারী জায়গা দখল করে মাত্র ৩ফুট দূরে গভীর পুকুর খনন ও দু’বছর আগে মহাসড়কের দুপাশে দূর্ঘটনা প্রতিরোধকারী গাছ কেটে ফেলায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সচেতন মহল ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা ঝালকাঠি সড়ক বিভাগ ও জেলা বনবিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতা ও উদাসীনতায় অভিযোগ করেন।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মেহেদী হাসান সানি জানান, গত শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই নিহত ১৭ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আহত ৩৫ জনের সকলেই চিকিৎসা নিয়ে মোটামুটি সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছে।
এবিষয়ে পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বলেন, বাস দুর্ঘটনার (২৪ ঘন্টা পেরিয়ে) ঘটনায় রবিবার (২৩জুলাই) বেলা ৬টা পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বাস দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের সাথে এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা আহতদের সাথে কথা বললেও কেউই মামলা করতে আগ্রহী না হওয়ায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
আমরা আরও কিছু সময় অপেক্ষা করব এর মধ্যে কেউ মামলা করতে আগ্রহী না হলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করবে। দূর্ঘটনাটির কারন কারো গাফিলতি কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এঘটনায় গাড়ীটির চালক-হেল্পারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খোজা হলেও এখন পর্যন্ত তারা আত্মগোপনে রয়েছে।
এদিকে জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিজুম বলেন, দূর্ঘটনার কারন জানতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মামুন শিবলিকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রট মামুন শিবলী জানান, আমরা তদন্তের শুরুতে ঘটনাস্থলে সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাসযাত্রীদের সাথে কথা বলেছি। গাড়ির ফিটনেস, রুটপারমিটসহ সকল কাগজ সঠিক চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স বা কোন গাফলতি ছিল কিনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দুর্ঘটনার সঠিক কোন কারণ বলা যাচ্ছে না।