যমুনা নদী ছোট করতে চাওয়ার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের নামের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি সত্য কি না এবং ওই প্রকল্প চূড়ান্ত করা হয়েছে কি না, তা-ও জানতে চেয়েছেন আদালত।
এক রিট আবেদনের শুনানির সময় বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তাকে এসব তথ্য দাখিলের জন্য মৌখিকভাবে আদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে আগামী রোববার এ বিষয়ে শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনকে আদালতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
রোববার (২১ মে) রিটের পক্ষে শুনানি করেন পরিবেশ ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
আদালতের আদেশের বিষয়টি জানিয়ে মনজিল মোরসেদ বলেন, “গত ১১ মার্চ দৈনিক পত্রিকায় ‘যমুনা নদী ছোট করার চিন্তা’ শিরোনামে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এরপর গত ২৭ মার্চ যমুনা নদী ছোট করার প্রকল্পে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগে চাকরিবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু জবাব না পেয়ে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে হাইকোর্টে রিট করি। রোববার এ রিটের শুনানি হয়। শুনানির সময় আদালতকে বলেছি, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। প্রধানমন্ত্রী নদী খননের কথা বলছেন। সরকারের নির্দেশনা হলো, নদী কীভাবে রক্ষা করা যায়, সেটা দেখা। এ ছাড়া নদী রক্ষার পক্ষে আইন ও হাইকোর্টের রায় রয়েছে। তা না করে কিছু কর্মকর্তা নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য যমুনা নদী ছোট করার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। এ ধরনের প্রকল্প নেন কীভাবে? পরে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তা সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আবুল কালাম খান দাউদকে মৌখিকভাবে নির্দেশনা দিয়ে প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের নাম-ঠিকানা চেয়েছেন। এ ছাড়া, অ্যাটর্নি জেনারেলকে শুনানির দিন থাকতে বলেছেন। আগামী রোববার এ বিষয়ে ফের শুনানি হবে।”
এর আগে গত ১১ মার্চ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, যমুনা নদী প্রতিবছর বড় হয়ে যাচ্ছে। বর্ষার সময় নদীটি ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার হয়ে যায়। এত বড় নদীর প্রয়োজন নেই। তাই এটির প্রশস্ততা সাড়ে ৬ কিলোমিটার সংকুচিত করা হবে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং প্রাকৃতিক পানি প্রবাহের অন্যতম উৎস যমুনাকে ছোট করার এমন আইডিয়া এসেছে খোদ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্তাদের মাথা থেকে। এজন্য তারা ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পও প্রণয়ন করেছেন। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে যখন বারবার ব্যয় সংকোচনের তাগিদ দেওয়া হচ্ছে, সে সময় মন্ত্রণালয়টি এমন প্রকল্প নিয়েছে কোনো ধরনের গবেষণা ছাড়াই। বিশেষজ্ঞরা বিরল এ প্রকল্পকে অবাস্তব বলছেন।