চাঞ্চল্যকর জেম হত্যার পরেও কারো কিছু হয়নি,তোর মতো বারীকে মারলে কিছুই হবে না
মোমিন ইসলাম,চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাবেক যুবলীগ নেতা ও শিবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর খাইরুল আলম জেমকে হত্যার পরেও কারো কিছু হয়নি। তোর মতো বারীকে মারলে তো কিছুই হবে না। কিনে নেয়ার পর সংস্কার কাজ চলা মার্কেটে চাঁদা দাবি করে না পেয়ে এমনভাবে হুমকি দেয়ার অভিযোগ করেছেন এক ব্যবসায়ী। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের ফুড ক্লাবের নিচতলা কিনে কাজ শুরুর পর থেকেই চাঁদা দাবি করে না পেয়ে হত্যার হুমকি ও মারধরের শিকার হয়েছেন বলে দাবি ওই ব্যবসায়ীর।
মঙ্গলবার (০৬ জুন) বিকেলে জেলা শহরের ফুড ক্লাবে এসব অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, ব্যবসায়ী আব্দুল বারী। সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার (০৬ জুন) দুপুরে মারধর ও পাঁচ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল বারী বলেন, সকল নিয়ম মেনে গত ০৪ এপ্রিল আমার স্ত্রী ডা. আসমা মাসুদা স্বর্ণার নামে ফুড ক্লাবের নিচের সাবেক রাধুনী হোটেলের জায়গাটি কিনে নেয়। এরপর তা খারিজ করে সেখানে সংস্কার কাজ শুরু করি। কিন্তু কাজ শুরুর পর থেকেই জেলার কিছু কুখ্যাত সন্ত্রাসী দল আমার কাছে চাঁদা দাবি করে। না দিলে হত্যার হুমকি ও জায়গা ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এনিয়ে সদর থানায় মামলা করতে গেলেও মামলা নেয়া হয়নি। আদালতে মামলা করলে আসামী গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে মিমাংসা করার শর্তে তারা আদালতে জামিন নেয়।
পুলিশের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে তিনি আরও বলেন, এই সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মূলহোতা বিসমিল্লাহ গার্মেন্টসের মালিক আব্দুর রহমান। তাকে জেলার প্রভাবশালী দুইজন রাজনৈতিক নেতা মদদ দিচ্ছেন। যার কারনে পুলিশ শুরু থেকেই পক্ষপাতিত্ব করছে। নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে না। মিমাংসার প্রতিশ্রুতিতে আদালত থেকে জামিন নিলেও এরপর থেকেই আরও হুমকি দিতে থাকে। এমনকি চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই মাস আগে হওয়া চাঞ্চল্যকর জেম হত্যার সাথে তুলনা করে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়।
নিজের নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে আব্দুল বারী বলেন, সর্বশেষ আমি জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খাঁনের শরণাপন্ন হয়। তাকে সকল কাগজপত্র দেখানোর পর মৌখিকভাবে কাজের অনুমতি দেন। এর প্রেক্ষিতে সোমবার (০৫ জুন) থেকে কাজ শুরু করি। আজ (মঙ্গলবার) আমার কেনা জায়গার বিপরীতে থাকা সোনালী ব্যাংকে ৫ লাখ টাকা জমা দিতে যাওয়ার পথে আমাকে ব্যাংকের সামনেই মারধর করে সন্ত্রাসীরা। আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রুহুল আমিনের লোকজন রুবেল, ওয়াহেদ, বাদশা, শাহ আলমসহ ২০-২৫ জন সন্ত্রাসী আমার উপর হামলা করে টাকা ছিনতাই করে নেই। যা ব্যাংকের সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখতে পাওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, হামলার সময় স্থানীয়রা আমাকে উদ্বার করেন এবং হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে জরুরি সহয়তা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আশা করছি, পুলিশ এ ঘটনায় নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
তবে টাকা ছিনতাই বা হত্যার হুমকি অস্বীকার করেছেন, বিসমিল্লাহ গার্মেন্টসের মালিক আব্দুর রহমান। মুঠোফোনে তিনি জানান, জায়গাটির প্রকৃত মালিক আমরা। এমনকি এ সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র ঠিক রয়েছে আমাদের।
এবিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন জানান, আজকের ঘটনায় খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে মঙ্গলবার (০৬ জুন) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত থানায় কোন লিখিত অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এসময় পুলিশের পক্ষপাতিত্বের বিষয়টি অস্বীকার করেন ওসি।