মোমিন ইসলাম,চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাবেক যুবলীগ নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর খাইরুল আলম জেম হত্যার ঘটনায় উচ্চ আদালতে জামিন পাওয়া ৬ আসামীকে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত। মঙ্গলবার (৩০ মে) বেলা ৩টায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আদীব আলী এই আদেশ দেন। এছাড়াও উচ্চ আদালতে জামিন পাওয়া ২৬ জনের জামিন বহাল রেখেছে আদালত। এর আগে দুপুরে জেম হত্যা মামলার ৩২ আসামী আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করে। পরে আদালতের বিচারক ২৬ জনের জামিন বহাল রেখে ৬ জনের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। এই মামলায় উচ্চ আদালতে জামিনপ্রাপ্ত প্রধান আসামী চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও জেলা আ.লীগের সদস্য মোখলেসুর রহমান আদালতে উপস্থিত হননি। কারাগারে যাওয়া আসামীরা হলেন- গত চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে অংশ নেয়া প্রার্থী ও বহিস্কৃত জেলা যুবলীগের সভাপতি সামিউল হক লিটন, চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদ রানা টিপু, আব্দুল কাদের, আলমগীর হোসেন, জামিল হোসেন, মাহিন রেজা উরফে মুমিন। পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) নাজমুল আজম টিপু জানান, জেম হত্যা মামলার মোট ৪৮ জন আসামী। তারমধ্যে ৩৪ জন আসামী উচ্চ আদালতে জামিন নেয়। আজকে (মঙ্গলবার) উচ্চ আদালতে জামিন পাওয়া ৩২ জন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। পরে আদালত ২৬ জনকে জামিন দেয়। এর আগে ০৩ মার্চ উচ্চ আদালতে তারা জামিন নেয়। হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৫ জন আসামী ১৬৪ ধারায় ১২ জন আসামীর সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। আসামীপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা মনে করি, আদালত বিচার বিশ্লেষণ করে সঠিক সীধান্ত দিয়েছেন। আসামীদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পর্যালোচনা করেই আদালত সীধান্ত দিয়েছে। এ ঘটনায় ১২ জন আসামী সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। এজাহারের অভিযোগের ভিত্তিতে পর্যালোচনা করে আদালত এই ০৬ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। অ্যাড. নজরুল ইসলাম আরও বলেন, হাইকোর্ট থেকে ৩৪ জন আসামীর জামিন হলেও মঙ্গলবার ৩২ জন আসামী আদালতে উপস্থিত হয়ে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন। বাকি দুইজনের মধ্যে একজন আসামী অন্য একটি মামলায় কারাগারে রয়েছেন এবং প্রধান আসামী মোখলেসুর রহমান শারীরিকভাবে অসুস্থ রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। উল্লেখ্য, গত ১৯ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদয়ন মোড় এলাকায় ইফতারির বাজার করার সময় খাইরুল আলম জেমকে দেশী-বিদেশী ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার প্রক্রিয়াকালে তার মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পর গত ২২ এপ্রিল রাত ২টার দিকে খাইরুল আলম জেমের বড় ভাই মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র, দুই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ৪৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।