চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইউএনওর নাম ভাঙিয়ে পুকুর খনন
মোমিনুল ইসলাম মোমিন-চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হায়াত ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) জুবায়ের হোসেনের নাম ভাঙিয়ে পুকুর খননের অভিযোগ উঠেছে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগটি অস্বীকার করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের গুপ্তমানিক রানীনগরের চৈতন্যপুর মাঠে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে- গত চারদিন ধরে চৈতন্যপুর মৌজায় ফসলি জমি সংলগ্ন আবদুস সামাদের জমিতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পুকুর খনন কাজ চলছে। সেখানে প্রায় ৮-১০টি ট্রাক্টরে মাটি বহন করছে। যাচ্ছে আশপাশের বিভিন্ন স্থানে ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
সুত্র জানায়, আবদুস সামাদ প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার কেউ মুখ খুলছেনা। ট্রাক্টর প্রতি এক হাজার টাকা দরে মাটি বিক্রয় করা হচ্ছে। ড্রেজার চালক জানায়, ঘণ্টায় দেড় হাজার টাকা দরে আট ঘণ্টা ড্রেজার চালানো হয়। প্রতি ঘণ্টায় আট ট্রাক্টর মাটি কাটা হয়। সে হিসেবে প্রতিদিন পুকুরে ৬৪ ট্রাক্টর মাটি কাটা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানায়, আবদুস সামাদ প্রভাবশালী হওয়ায় আশপাশের জমির মালিকদের কথা চিন্তা ভাবনা না করেই অবাধে পুকুর খনন করে চলেছে এবং পুকুর খননের মাটিগুলো তার নিজস্ব অন্যান্য জমিতে ফেলা হচ্ছে। পরবর্তীতে ফসলি জমির হুমকির মুখে পড়বে। ক্ষতিগ্রস্থ হবে সাধারণ কৃষক। কিন্তু বলা হচ্ছে- গুপ্তমানিক সরকরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গর্ত ভরাটের জন্য পুকুর খনন করা হচ্ছে।পুকুর খননকারী আলহাজ্ব আবদুস সামাদের সহযোগি শাহ আলম বলেন, এই পুকুর হাজি সাহেবের নামে রেকর্ড আছে। নিজের জমিতে পুকুর খনন করলে কারো কিছু করার নেই। এ ব্যাপারে আবদুস সামাদ বলেন, আমি ১১৫নং গুপ্তমানিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি। বিদ্যালয়ের পার্শ্বে গর্ত ভরাটের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনারের (ভুমি) নিকট অনুমোদন নিয়ে পুকুর খনন করা হচ্ছে। তবে অনুমোদন কপি দেখতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কেন দেখাবো ইউএনও’র কাছে চলে যান। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা জানান, বিদ্যালয় সংলগ্ন বহুদিনের পুরনো গর্তটি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য বিপদজ্জনক হওয়ায় ভরাটের জন্য দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। সেই বরাদ্দের টাকা দিয়েই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আবদুস সামাদের নিকট হতে নিজ পুকুরের খনন করা মাটি ট্রাক্টর প্রতি এক হাজার টাকা দরে কেনা হচ্ছে। সহকারী কমিশনার (ভুমি) জুবায়ের হোসেন বলেন, সেখানে পুকুর খননের জন্য লিখিত বা মৌখিকভাবে কাউকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হায়াত জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে- প্রভাবশালী মহল ও সরকার দলীয় লোকজন প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে অবাধে শত শত পুকুর খনন করছে। যা নিয়মবর্হিভূত।