চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিপুল ভোটে জয়
মাসুদ পারভেজ
২০২০ সালে মঈন উদ্দীন খান বাদলের মৃত্যুর পর চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে মোছলেম উদ্দিন আহমদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবার তার মৃত্যুর পর সেই একই আসনে উপ-নির্বাচনে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকার প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ। ১৯০ ভোট কেন্দ্রে ৬৭ হাজার ২০৫ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন তিনি। এই জয়ের মাধ্যমে প্রয়াত মোছলেম উদ্দিন আহমদের ‘উত্তরসূরী’ হলেন নোমান আল মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) রাত সোয়া আটটার দিকে নগরের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়ামে স্থাপিত নির্বাচন কমিশনের অস্থায়ী নির্বাচনি ফলাফল সংগ্রহ ও তথ্য পরিবেশ কেন্দ্র থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান ফল ঘোষণা করেন। এর আগে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ১৯০ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ এবং সন্ধ্যা ৬টা থেকে গণনা শুরু হয়। নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ১৭ হাজার ৬৫২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৬৩ হাজার ৫৪৩ জন, নারী ২ লাখ ৫৪ হাজার ১০৯ জন।
ফলাফলে দেখা যায়, ১৯০ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ পেয়েছেন ৬৭ হাজার ২০৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী ফ্রন্টের সেহাব উদ্দিন মুহাম্মদ আবদুস সামাদ মোমবাতি প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৮৭ ভোট, চেয়ার প্রতীকে সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন ১ হাজার ৮৬০ ভোট, আম প্রতীকের প্রার্থী কামাল পাশা ৬৭৩ ভোট এবং একতারা প্রতীকের প্রার্থী মীর মোহাম্মদ রমজান আলী পেয়েছেন ৪৮০ ভোট।
নির্বাচনে মোট প্রার্থী ৫ জন। তারা হলেন—আওয়ামী লীগের নোমান আল মাহমুদ, ইসলামী ফ্রন্টের সেহাব উদ্দিন মুহাম্মদ আবদুস সামাদ, ইসলামিক ফ্রন্টের এস এম ফরিদ উদ্দীন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির কামাল পাশা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রমজান আলী। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় কামাল ও রমজান আলীর প্রার্থিতা বাতিল হয়। পরে আপিল করে দুজন মনোনয়নপত্র ফেরত পান।
নির্বাচনে ২২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া দুজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটও দায়িত্বে রয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশের পাশাপাশি র্যাবের ৬টি ও ৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ ফেব্রুয়ারি সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে চট্টগ্রাম-৮ আসনটি শূন্য হয়। পরে এই আসনে হেভিওয়েটসহ ২৫ জন প্রার্থীকে টপকে মনোনয়ন পান নোমান আল মাহমুদ।
নোমান আল মাহমুদ প্রয়াত দুই এমপি মইনুদ্দিন খান বাদল ও মোছলেম উদ্দিন আহমদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের বলয়ে রাজনীতি করেন বলে জনমুখে প্রচলিত আছে। তার নির্বাচনি প্রচারণায়ও তেমটা আভাস মিলেছে। দিন রাত নোমান আল মাহমুদের জন্য নগরে নগরে চষে বেড়িয়েছেন তিনি।
সাবেক ছাত্রনেতা ও যুবনেতা হিসেবে নোমান আল মাহমুদ অন্তত পাঁচ দশক ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। ১৯৭১-৭৩ সালে সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে ৭৪-৭৭ সালে মহানগর ছাত্রলীগের কমিটিতে শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক হন। ৭৯ সালে যুবলীগে মহানগর কমিটির সদস্য হন।
কেন্দ্রীয় যুবলীগের মোস্তফা মহসিন মন্টু ও ভুলু সরকারের কমিটির সময়কালে, ৮৭ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে মহানগর যুবলীগ সভাপতি ও পরবর্তীতে ’৯৪ সালে শেখ সেলিম-কাজী ইকবাল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ৯৭ সালে জাহাঙ্গীর কবির নানক-মির্জা আজম কমিটির সদস্য হন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।