চট্টগ্রামে কর্ণফুলীতে মা-ছেলেকে কুপিয়ে খুন
মাসুদ পারভেজ
জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মা-ছেলে খুন হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নিহতরা হলেন-শিকলবাহা ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তৈয়ব আহমেদের স্ত্রী হোসনে আরা (৫০) ও তার ছেলে মো. পারভেজ (৩২)।
এছাড়া তৈয়ব আহমেদের আরও দুই ছেলে মো. আরজু (৪৫) ও মো. সিফাত (৩১) গুরুতর আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাড়ির সামনে চলাচলের রাস্তা নিয়ে তৈয়বের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশি ইমরানের পরিবারের বিরোধ ছিল। আগেও দুই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কয়েকবার মারামারি হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যার দিকে আবারও ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ মারামারি শুরু করে।’
‘সেখানে প্রতিপক্ষের হামলায় হোসনে আরা ও তার ছেলে গুরুতর আহত হন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। উভয়ের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন আছে।’
ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ওসি দুলাল মাহমুদ।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম আশেক জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় চারজনকে হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক দু’জনকে মৃত ঘোষণা করেন। আরও দু’জন ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন।
এদিকে নগর পুলিশের বন্দর জোনের উপ কমিশনার শাকিলা সোলতানা বলেন, ‘দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ পুরনো। হোসনে আরার পরিবারের দায়ের করা একটি দেওয়ানি মামলা আদালতে বিচারাধীন আছে। এরপর সম্প্রতি প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মারামারির অভিযোগ এনে কর্ণফুলী থানায়ও তারা একটি মামলা দায়ের করে। মামলার আসামিপক্ষের হামলায় আজ মা-ছেলে নিহত হয়েছে।’
ঘটনাস্থলে যাওয়া নগর পুলিশের বন্দর জোনের উপ কমিশনার শাকিলা সোলতানা জানান, শিকলবাহার ব্লকপাড় ইসমত হাজীর বাড়ির আবু তৈয়ব ও মৃত মোহাম্মদ আলীর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিরোধ পুরনো। দুই পরিবারের বসতির মাঝখানে লাগোয়া রাস্তার সীমানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। তৈয়বের পরিবারের দায়ের করা একটি দেওয়ানি মামলা আদালতে বিচারাধীন আছে।
এ ছাড়া এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে সেই বিরোধ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে ঝগড়া ও মারামারি হয়। এ নিয়ে কর্ণফুলী থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের হয়েছিল।
‘মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তৈয়বের পরিবারের সদস্যরা তাদের দাবি করা জায়গায় স্থায়ী দেয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করে। এসময় মৃত মোহাম্মদ আলীর পাঁচ ছেলে মহসীন, মোসলেম, মুরাদ, টিপু ও ইমরান গিয়ে বাধা দেয়। এ নিয়ে দুই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে মারামারি শুরু হলে মহসীন, মোসলেম ও ইমরান মিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হোসনে আরা ও তার তিন ছেলের মাথায় আঘাত করে। হোসনে আরা ও তার ছেলে পারভেজ নিহত হয়েছেন’— বলেন উপকমিশনার শাকিলা সোলতানা