মোঃ শামীম হোসেন - খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ- খুলনার দাকোপে আমন ধান কাটা মাড়াই শুরু কৃষক কৃষাণিদের মুখে হাসির ঝিলিক। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে দাকোপ উপজেলায় মাঠপর্যায়ে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ। এলাকার প্রায় আমন চাষী ধান ঘরে তোলার লক্ষ্যে ব্যস্ত সময় পার করছে এলাকা ঘুরে দেখা যায়।
সম্প্রতি উপজেলার বাজুয়া ইউনিয়নের চাঁদপাড়া গ্রামের আমন চাষী সুপদ রায় জানান সকল প্রকৃতি আবহাওয়া ও কারেন্ট পোকার আক্রমনের মধ্যে দিয়ে এবার জমিতে ধানের ফলন ভালো হয়েছে । তিনি আরো বলেন জমিতে ধান পেকে গেছে বৈরি আবহাওয়া থাকার কারণে কাটতে পারিনি তাছাড়া পরভাসির অভাব থাকায় এলাকায় অনেকেই ধান কাটতে পারছে না। মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি রোপা আমন মৌসুমের শুরুতে দাকোপের কৃষকরা আবহাওয়ার প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছে। চারা রোপণের বেশিরভাগ সময়ে খরার কবলে পড়েছিলেন। এমন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও প্রায় ১৯ হাজার ১ শত ৪০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়। এরপর পানির অভাবে চরম ব্যাহত হয়েছে এই চাষাবাদ। এরই মধ্যে পোকা-ইঁদুরের আক্রমণ দেখা দেয়। এভাবে নানা ধকল সামলিয়ে আশানুরূপ ফলন ঘরে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। এরই মধ্যে দেশীয় জাতের ধান কাটতে শুরু করেছে কৃষক।
কৈলাশগঞ্জের কৃষক গৌর মন্ডল জানান, এ বছর দেড় একর জমিতে ধানের চারা রোপণের পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময়ে খরা আর বৃষ্টির পানি কম থাকায় সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি। কৃত্রিম সেচ দিয়ে আড়াই বিঘা জমিতে আমন চাষাবাদ করেছেন তিনি। এরইমধ্যে ধান কাটা শুরু করা হয়েছে। তিনি আশা করেন ভালো ফলন ঘরে তুলতে পারবেন।
কৈলাশগঞ্জের ধোপাদী গ্রামে অবসর প্রাপ্ত পশু অধিদপ্তরের বাগেরহাট জেলার কর্মকর্তা ড. শুকেন্দু শেখর গাইন বলেন
ধান ফুলে বের হওয়ার সময় আমাদের পার্শ্বের জমিতে কারেন্ট পোকা বা বাদামী গাছ ফড়িং এ কারো কারো ক্ষেত শুকিয়ে খড় বানিয়ে ছেড়েছে তারপর কীটনাশক ব্যবহার করে আমরা আমাদের জমির ধান রক্ষা করেছি। তাই সব মিলিয়ে নানা সমস্যার মধ্যে দিয়ে যে ধান হয়েছে এখন বাজার ধর ঠিক থাকলে কৃষক লাভবান হবে। তা নাহলে কৃষকের চাষ খরচ উঠবে না আমি আমার জমির ধান কাটাতে শুরু করেছি। দাকোপ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ শফিকুল ইসলাম জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে এবার উপজেলার পৌর এলাকা ও ৯টি ইউনিয়নে ১৯ হাজার ১শত ৪০ হেক্টর জমিতে আমন রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আমন আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে দাকোপ কৃষি অফিস থেকে কৃষকের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে বিভিন্ন প্রকার পরামর্শ ও উপদেশ দিয়ে থাকেন বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়, জীবন-জীবিকার জন্য দাকোপের অধিকাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এ উপজেলার শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ জনসাধারণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষি ফসল ঘরে তুলে তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণে চেষ্টা করে। এখানে ধান, তরমুজ, রবিশস্য ও সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। এ সবের মধ্যে সবচেয়ে লাভজনক ফসল হচ্ছে রোপা আমন ধান। তবে এ বছর বাড়তি খরচ মাথায় নিয়ে আমন আবাদে নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে তাদের।