মোঃ শামীম হোসেন - খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ- সংসার জীবনে অশান্তির কারণে তরুণী গৃহবধূ শামীমা আক্তারের (১৮) ওপর ক্ষুব্ধ ছিল স্বামী সাইদুর রহমান। সেই ক্ষোভ মেটাতে স্ত্রীকে খুলনা নগরীর আন্দিরঘাট এলাকার একটি কাশবনে নিয়ে সাইদুর ও তার দুই বন্ধু মিলে ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। দুই সহযোগী হলেন- সোহাগ মোল্লা ও শরিফুল ইসলাম তপু। তিনজনকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, শুক্রবার শামীমাকে হত্যার ঘটনা বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সাইদুর। তিন আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের ডেপুটি কমিশনার রাশিদা বেগম জানান, ২১ সেপ্টেম্বর হরিণটানা থানা পুলিশ আড়ংঘাটা থানার শলুয়া বাজার এলাকা থেকে সাইদুরকে আটক করে। সে কয়রা সানাবাড়ি এলাকার আব্দুর রহিম মোল্লার ছেলে। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে, রায়েরমহল মন্দিরের মোড় এলাকার জামাল মোল্লার ছেলে সোহাগ ও রায়েরমহল পশ্চিমপাড়ার মকিতুর রহমানের ছেলে তপুকে গ্রেপ্তার করা হয়। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলায় ঘরবাড়ি হারিয়ে কয়রা থেকে স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে শামীমাকে নিয়ে নগরীর হরিণটানা থানার রায়েরমহল এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস শুরু করেন বাবুল সানা। মেয়ে শামীমার বয়স ১৮ হওয়ার পরই অভাবের তাড়নায় সাইদুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে দেন। কিন্তু বিয়ের মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে তাদের দাম্পত্য জীবনে অশান্তি দেখা দেয়।
গত ৩ জুলাই শামীমাকে মারধর করে সাইদুর। এতে বাবুল সানা মেয়েকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। এ নিয়ে শ্বশুরের সঙ্গে সাইদুরের বাকবিতণ্ডা হয়। সাইদুর আগে থেকেই নেশাগ্রস্ত ছিল। সে তার বন্ধুদের নিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পরদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে বন্ধু সোহাগকে নিয়ে সাইদুর শ্বশুর বাড়িতে যায়। একটি মোবাইল ফোন ও বোরকা কিনে দেওয়ার কথা বললে শামীমা রাজি হন। স্বামীর সঙ্গে বয়রা বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হন। গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই আন্দিরঘাট সেতুর কাছে ভ্যান থামিয়ে শামীমাকে পার্শ্ববর্তী কাশবনে নিয়ে যায় সাইদুর। সেখানে তারা তাকে ধর্ষণ করে। পরে সোহাগ শামীমার দুই পা, তপু দুই হাত ও সাইদুর গলা চেপে ধরে হত্যা করে। ৫ জুলাই দুপুরে হরিণটানা থানা পুলিশ শামীমার লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে মেয়ের লাশ শনাক্ত করেন বাবুল সানা। তিনি সাইদুরের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪ থেকে ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।