কি লাভ মূল্য বেঁধে দিয়ে সরকারের মানছে না কোন ব্যবসায়ী বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ
মোঃ হাফিজুর রহমান
বাগেরহাটের ফকিরহাটে বাজারের একটি দোকানে পেঁয়াজ বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে। ফকিরহাট বাজারে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দরে ডিম, আলু ও পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এখানকার অধিকাংশ দোকানে মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা হচ্ছে না। ফলে বিক্রেতারা নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম চাচ্ছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্রেতারা।বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রথমবারের মতো তিনটি কৃষিপণ্যের দাম বেঁধে দেয় সরকার। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এ ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ডিম, আলু ও দেশি পেঁয়াজ বেঁধে দেওয়া দাম অনুযায়ী বিক্রি করতে হবে। এখন থেকে প্রতিটি ফার্মের ডিম ১২ টাকা, আলু খুচরা পর্যায়ে ৩৫-৩৬ টাকা (হিমাগার পর্যায়ে ২৬-২৭) এবং দেশি পেঁয়াজের দাম হবে ৬৪-৬৫ টাকা। কিন্তু ফকিরহাটের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এর বাস্তবায়ন দেখা যায়নি। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা সদরের প্রধান বাজারের রোজাউল স্টোর, সজল স্টোর, রহমান স্টোর, আসফাক হাওলাদারসহ বিভিন্ন দোকানে ভারতীয় এলসি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা, আলু ৫০ টাকা, ডিম ৫২ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।আলু ও পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ী সততা বাণিজ্য ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী সাদেক মেম্বার বলেন, ‘রোববার সকালে খুলনার পাইকারি আড়ত থেকে আমরা বেশি দামে আলু, পেঁয়াজ কিনেছি। এরপর গাড়ি ভাড়া ও শ্রমিক খরচ দিয়ে ফকিরহাটে সে পণ্য সরকারি মূল্যে বিক্রি করা সম্ভব নয়।’ বাজারের মোহাম্মদ শেখ নামের এক পাইকারি ব্যবসায়ীও এ দাবি করেন।ফকিরহাট বাজারের ক্রেতা আরিফুর রহমান, জসিম শেখ, হারিহর দাস ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কম বেতনে চাকরি করি। বর্তমান বাজারে যে পরিস্থিতি তাতে সংসারের চাহিদা মেটাতে বেতনের পাশাপাশি সঞ্চয় ভেঙে খরচ করতে হচ্ছে।ফকিরহাট বণিক সমিতির সভাপতি শেখ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলা বা জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে আমরা কোনো নির্দেশনা পাইনি। প্রশাসনের মনিটরিং থাকলে অসাধু ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেত না। আমরা প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে চাই।’ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শোভন সরকার বলেন, ‘বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।’এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে জেলার ব্যবসায়ীদের সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রয় করাসহ দোকানে মূল্য তালিকা প্রদর্শন এবং ক্রয়কৃত পণ্যের রশিদ সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা লোকবল সংকটে ফকিরহাট যেতে না পারলেও বাগেরহাট এবং এর আশেপাশে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছি।’