জান্নাতুল ফেরাদাউস
আইন বিভাগ বাংলাদেশ ওয়ার্ড ইউনিভার্সিটি
ভাষা মানুষের জন্মগত অধিকার।এর নাই কোন আকার। চলে একে বেঁধে রাখা যায় না তারে। প্রবাহমান নদীর মতো এটা বয়ে চলে।
আধুনিকতার সাথে ভাষাও আধুনিক হয়। ছুটে চলে দুর্বার গতিতে। তার মানে এই নয় যে বিদেশী ভাষার সাথে মিশ্রণে বলতে। আধুনিকতা মানে নিজ দেশীয় ভাষা বর্জন? আজকাল প্রায়ই দেখা যায় আধুনিকতার নামে দেখা যাচ্ছে বাংলা ভাষাকে বিকৃত উপস্থান। আধুনিকতার মানে কি ভাষাকে বিকৃত করা?
ভাষার আধুনিকতা মানে নিজ ভাষাকে আরো সুন্দর ভাবে আকর্ষিত করে তোলা। ভাষা হচ্ছে সংস্কৃতির ধারক বাহক। আপনার ভাষা উত্তর দিবে আপনার সংস্কৃতি কতটা আধুনিক। আধুনিকতা হচ্ছে আর নিজ সংস্কৃতিকে বিকৃত করা না।আধুনিকতা মানে নিজ সংস্কৃতিকে আরো সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা। পৃথিবীর অনেক দেশ তারা তাদের মাতৃভাষা ছাড়া কথা বলতেই চায় না।যেমন চায়নাতে ওরা চায়নিজ ভাষা ছাড়া কথা বলতে চায় না।
পর্তুগীজ বলুন আর স্প্যানিশ বলুন তাদের ভাষাকে তারা সমৃদ্ধ করছে। তারা নিজ ভাষা ব্যতিত অন্যভাষায় কথা বলাকে অসম্মান মনে করে। অন্যদিকে আমাদের এই বাংলা ভাষার রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস, এর জন্য ঝড়েছে তাঁজা প্রাণ। তবুও আজ আমরা কি দেখছি? আমাদের দেশে এই বাংলা ভাষাকে বিকৃত ভাবে উপস্থাপন হচ্ছে। অনেকে আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলাকে অপরাধ মনে করে। কোথাও কেউ আঞ্চলিক ভাষায় কথা বললে তাকে নানা বিশেষণে বিশেষায়িত করা হয়। আঞ্চলিক চর্চা আর ভীনদেশি ভাষার মিশ্রণে কথা না বলতে পারলে তাকে সনাতনী প্রচলন বলা হয়। কেউ যদি নিজ সংস্কৃতি পরিচর্যা করে তাদেরকে অশিক্ষিত বলে গালি দেওয়া হয়।
এর পিছনে মুল কারণ হচ্ছে প্রযুক্তির অাগ্রাসন।এর ফলে বিদেশি সংস্কৃতি খুব সহজে চলে আসে। তাছাড়া শোষিত হবার ব্যপারটা মাথার মধ্যে ঝেকে বসে আছে। সে ধ্যান ধারণা থেকে আঞ্চলিক ভাষাকে একটু নিচু করে দেখার প্রবনতা তৈরি হয়েছে। কিছু অতি উৎসাহী মানুষ ভাষাকে শুদ্ধ রুপে বলতে গিয়ে জঞ্জা পাকিয়ে ফেলে। অনেকে ইংরেজী বাংলাকে মিশিয়ে বলে। তারা একে আধুনিকতা মনে করে। একশ্রেণীর শিক্ষিত মানুষেরা বাংলাকে বাদ দিয়ে শন্তানকে ইংরেজী শেখাতে বাধ্য করে। কথা মধ্যে ইংরেজী বলতে না পারলে তারা শিক্ষিত বলে মনে করে না।
আসলে প্রত্যেক ভাষাই গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর সকল ভাষা জানা থাকা ভালো কিন্তু মাতৃভাষার চর্চাটা দরকার। এখানে কতৃপক্ষের কিছুটা দায় আছে। তারা কিছু নীতিমালা গ্রহন করছে না। চায়নাতে যেমন চায়নিজ ভাষা ছাড়া কথা বলতে চায় না। ওদের সব কিছু নিজস্ব ভাষায় তেমনি আমাদের দেশে উচিৎ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেন বাংলাতে পাঠ্য দান করা হয়। পৃথিবীর উন্নত দেশে নিজ ভাষায় উচ্চশিক্ষা প্রদান করা হয়। অন্যদিকে আমাদের দেশে সব কিছু হাস্য রসাত্বকে পরি৮০নত হয়েছে। সব চলছে যেন উল্টোমেরুতে। বাংলে রক্ষার জন্য রক্ত দেওয়া হয়েছে। আজ মনে হচ্ছে সে রক্ত বৃথা যাচ্ছে। রক্তে কেনা এই বাংলা ভাষাকে রক্ষা করা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে প্রতয় বেঁচে থাকুক সকল মাতৃভাষা আপন মহিমায়।